বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকালে জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী এই দাবি জানান।
অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে হাসানুল হক ইনু বলেন, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের কথা চিন্তা করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্কমুক্ত রাখুন।
প্রস্তাবিত বাজেট থেকে সংবাদপত্র শিল্পের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ করা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংবাদপত্র শিল্প রক্ষায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে। সংবাদপত্রের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট সঠিক না। প্রধানমন্ত্রীর ৯ বছরে গণমাধ্যমের যে বিকাশ এবং প্রসার ঘটেছে তা সংবাদপত্র শিল্পকে একটু ধাক্কা দেবে, হোঁচট খাবে।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচকদের উদ্দেশে বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সফল বলবেন আর অর্থমন্ত্রীকে ব্যর্থ বলবেন এটা হতে পারে না। অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শক্রমেই বাজেট দিয়েছেন। এভাবে ঢালাও ভাবে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করা ঠিক হবে না। অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আপনারা স্বীকার করছেন। একদিকে বলবেন অর্থনীতি সফল। আরেক দিকে অর্থমন্ত্রী ব্যর্থ এটা হবে না। অর্থনীতি সফল হলে অর্থমন্ত্রীও সফল, প্রধানমন্ত্রী সফল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আইন আবগারি শুল্ক ও সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানো নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে দোষারোপ করেছেন অনেকে। তার ওপর তীর ছুড়েছেন। এই তিনটি বিষয়ই শুধু বাজেট নয় বাজেটে আরো অনেক বিষয় আছে। এই বাজেট দিক বদলের ধারাবাহিকতার বাজেট। এতো বড় বাজেট উত্থাপন করা মানে জাতীয় সক্ষমতার পরিচয়। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিশাল বরাদ্দ। গ্রামীন উন্নয়ন খাতে বিশাল বরাদ্দ আছে। যদিও কৃষিখাতে বরাদ্দ কম হয়েছে। এই ৯ বছরে সরকার দরিদ্র, হতদরিদ্র দূর করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের অর্থমন্ত্রী পেছনের দিকে হটা শুরু করেছিলো। সেখান থেকে অর্থনীতি সামনের দিকে এগিয়ে আনা হয়েছে। যারা সাম্রাজ্যবাদ জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠোপোষকতা করে যারা বিশ্বব্যাংক আইএমএফ এর কথায় চলে। তারাই অর্থনীতিকে পেছনের দিকে নিয়ে গিয়েছিলো। ২০০৯ সালে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসে সেই পরিবর্তনই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা করে।
আগামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪টি চ্যালেঞ্জর কথা বলেছেন তথ্যমন্ত্রী।
চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে- সঠিক সময় নির্বাচন করা, নির্বাচন বানচাল করার জন্য যে চেষ্টা করবে তা রুখে দেওয়া,উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখা, জামায়াতি জঙ্গিবাদ উগ্রবাদকে ক্ষমতার বাইরে রাখা।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, রাজনীতিতে যুদ্ধ রয়েছে, অর্থনৈতিক যুদ্ধ রয়েছে। এবার যদি রাজনৈতিক যুদ্ধে হেরে যাই, তাহলে অর্থনৈতিক যুদ্ধে পরাজিত হবে। তাই রাজনৈতিক যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো সামনে নির্বাচন। শত্রু মিত্রকে চিহ্নত করতে হবে। ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দেন। বন্ধুদের কাছে রাখুন এবং শত্রুদের কোনো ছাড় দেবেন না। তবেই কেবল সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।
তিনি বলেন, এখন আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে জঙ্গি দমনের যুদ্ধ। জঙ্গির সঙ্গীকে ক্ষমতার বাইরে রাখার যুদ্ধ। আর অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যুদ্ধ। এই তিন যুদ্ধ করে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের অর্থনৈতিক যুদ্ধের যে অর্জন তার ফসল এই বাজেট।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ব্যাংকের লুটপাট অব্যহত আছে। আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে ফিরে আসছি। সেখানে বিচার দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হতে হবে। ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎকারীরা জামিন পাবার পরে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে বের হয়ে যাবে। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মারার পরে জামিন নিয়ে দুই আঙ্গুল দেখিয়ে অর্থাৎ বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে বেরিয়ে আসেন এটা বাজে একটা সংস্কৃতি। ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার পরে খালেদা জিয়া বিজয় চিহ্ন দেখাতে দেখাতে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসেন এটা জাতির জন্য লজ্জার। আমি সবাইকে বলবো আসুন আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৭/আপডেট ১৪০২
এসকে/এসএম/বিএস