নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বুধবার (১৯ জুলাই) সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী যারা আছেন তারা যেন ২৪ ঘণ্টা ট্রানজেকশন করতে পারেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নৌসচিব ও কাস্টমস কর্মকর্তারা বেনাপোলে গিয়েছিলেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কার্যক্রম শুরুর প্রাথমিক কাজ শেষ করেছেন। একই সাথে চট্টগ্রাম বন্দরেও এ কার্যক্রম শুরু করেছি। যাতে করে এই দুটি বন্দরে আমদানি-রফতানিকারকরা সুবিধা পান।
তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা এখানে ব্যাংক এবং কাস্টমস অফিস খোলা থাকবে। এনবিআর এবং ব্যাংক ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে।
শাজাহান খান আরও বলেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে আমরা আশা করি এটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে পারবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমরা এ ব্যাপারে প্রস্তাবনা দিয়েছি যাতে তিনি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী মোটামুটি রাজি হয়েছেন। আমরা এ ব্যাপারে সামারি পাঠালে একটা তারিখ দেবেন এবং সেই তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবো।
পেট্রাপোল ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান মন্ত্রী।
অন্যান্য স্থলবন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হবে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অন্য বন্দর এই মুহূর্তে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার মতো অবস্থা নেই। কারণ সব বন্দরে একইভাবে মালামাল আমদানি-রফতানি হয় না। ভবিষতে যেখানে আমদানি-রফতানি বেশি হবে সেখানে একই পদ্ধতিতে আমরা এগোবো।
এই মুহূর্তে ভোমরা বন্দরের ভালো অবস্থান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হয়তো কিছুদিন পরেই একইভাবে সেখানে কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজন হতে পারে।
বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতার এক প্রশ্নে কাস্টমসের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের আগেও কেবল রফতানি কার্যক্রমের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা ছিলো। আমাদের এই মুহূর্তে কোনো অসক্ষমতা বা দুর্বলতা নেই।
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জটলা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, একটি দুর্ঘটনার কারণে দুটি গেইন্টি ক্রেন নষ্ট হয়ে গেছে। তিনটি গেইন্টি ক্রেন এসেছে, আশা করছি এই বছরের মধ্যে ১১টি আসবে। আগামী বছরের মধ্যে আরও ছয়টি সংগ্রহ করার আশা করেন মন্ত্রী।
‘যারা এগুলো নিয়ে জরিপ করেন তাদের ধারণা ছিলো ২০১৬ সালের মধ্যে আমরা হয়তো ২০ লাখ হ্যান্ডেলিং করবো, আমরা দেখেছি ২০১৫ সালের মধ্যে এর বেশি হ্যান্ডেলিং করেছি। আমরাদের যে সক্ষমতা ছিলো তা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারিনি। ’
তিনি বলেন, বৃষ্টি-বাদলের কারণে চট্টগ্রাম শহর পানির নিচে থাকায় অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিলো বলে তাৎক্ষণিকভাবে জটিলতা হয়েছিলো। তাছাড়া আমরা এটাকে ওভারকাম করতে পারবো খুব শিগগিরই।
আরও কয়েকটি টার্মিনাল নির্মাণের কাজে হাত দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আশা করছি পতেঙ্গা টার্মিনাল ২০১৮ সালের মধ্যে একাংশ নৌ বাহিনী আরেক অংশ সেনাবাহিনী করতে পারবে। কাজটি খুব শিগগিরই শুরু করতে যাচ্ছি। পতেঙ্গা টার্মিনাল হয়ে গেলে জটলা আর থাকবে না। জেটি নির্মাণ হয়ে গেলে আর জাহাজ জট থাকবে না। লালদিয়াতেও কাজ শুরু করেছি। নতুন করে তিনটি টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দরে নির্মিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে নদী খননের ব্যবস্থা নিয়মিত রেখেছি।
পতেঙ্গায় ৭ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা হবে ৯ দশমিক ৫ মিটার। ফলে বড় জাহাজও আসতে পারবে। আশা করি ২০১৮ সালের মধ্যে পতেঙ্গা টার্মিনালকে অপারেশনে নিয়ে আসতে পারবো।
নৌ পরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী দুর্নীতি দমন কমিশনের হাতে ঘুষ গ্রহণকালে আটক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিষয়টা তদন্তের অপেক্ষায়। এটা তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারি না।
সভায় নৌসচিব অশোক মাধব রায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাস্টমস, ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭/আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ