শুক্রবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টায় কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের পাশে ‘১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্প’ পরিদর্শনে এসে এ কথা বলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, যেহেতু সেনবাহিনী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে, তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, ২০১৮ সালের মধ্যেই এটি শেষ হবে।
‘এখন যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, কাজ শেষ হলে চমৎকার দৃশ্য ফুটে উঠবে। বুয়েটের ডিজাইনে রাজউকের সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন চলছে’।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, ‘বিলম্বিত হওয়া প্রকল্পগুলো যেকোনোভাবে ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ করতে আমি রাজউকের নতুন চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি। ’
মন্ত্রী এ সময় জানান, আইকনিক ১৪২তলা টাওয়ারসহ আরও অনেক টাওয়ার হবে পূর্বাচলে। এর কোনোটি হবে ৬০, কোনটি ৮০, কোনটি ৫০ তলার। ’
‘এজন্য ১০০ একর জমি লিজের জন্য টেন্ডার দিয়েছি। ৩ মাসের মধ্যে টেন্ডার অ্যাওয়ার্ড করবো। আমরা ৬ মাস সময় দিয়েছি তারা কাজ করে চিহ্নিত করবে কোথায় কতোতলা টাওয়ার করা যাবে, বলেন মন্ত্রী’।
তিনি বলেন, ‘এটি দুবাই ও অন্যান্য সিটির মতো আইকনিক টাওয়ার বা শহর হয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘পূর্বাচল উইল বি আওয়ার নিউ টাউন সিটি। স্মার্টসিটি হবে বলেই আমরা টার্গেট করেছি’।
আরও ব্যাখা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বোঝাতে চাই যে এখানে অত্যাধুনিক স্যুয়ারেজ সিস্টেম থাকবে। ময়লা যেখানে-সেখানে নালা-নর্দমায় ফেলতে দেবো না। লেক থাকবে পরিষ্কার, সঙ্গে থাকবে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন। স্যুয়ারেজ ও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি থাকবে আলাদা।
মন্ত্রী আর জানান, পূর্বাচল একমাত্র প্রজেক্ট যেখানে জিন্দা ইকোপার্কের ৫০ একর জমি প্লটিং করা হয়নি। আমরা পার্ক হিসেবেই রেখে দিয়েছি। পূর্বাচলে আমরা ৪৮ কিলোমিটার মেনমেইড লেক করছি। যেখানে আগে কোনো লেক ছিলো না। রাজউকের অনেক বদনাম থাকতে পারে, কিন্তু তাদের বহু প্রকল্প দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে।
উত্তরা প্রজেক্টের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘গো অ্যান্ড সি’। সেখানে সাড়ে ৮ কিলোমিটার লেক করেছি। নদী থেকেও বড় লেক করেছি। লেকের কোথাও কোথাও আড়াইশ’ ফিট আবার কোথাও ৪শ’ ফিট। তুরাগ নদী বা বালু নদীও চারশ’ ফিট নেই। দিস ইজ আওয়ার কোয়ালিটি।
পূর্বাচলে ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার খাল, প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক, ৩৯ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, চারটি ইউলুপ, খালের ওপর ১৩টি সেতু, চারটি এক্সপ্রেসওয়ে, ফুটওভারব্রিজ এবং পাঁচটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া একটি পাম্প হাউজ, ১২টি ওয়াটার বাস স্টপ ছাড়াও ৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার স্টর্ম স্যুয়ার লাইন নির্মাণ করা হবে বলে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের দু’পাশে এ খাল খনন করা হবে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে দু’পাশেই সাড়ে ৬ মিটার সার্ভিস সড়ক থাকবে।
এরপর তিন মিটার প্রশস্ত হাঁটার পথের পর ৩০ মিটার খাল থাকবে। খালের পর আবার দুই মিটার হাঁটার পথ, ছয় মিটার সার্ভিস রোড থাকবে। সবার শেষে থাকবে দেড় মিটার করে হাঁটার পথ।
পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজউকের সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার আনিস, রাজউকের প্রকল্প পরিচালক নুরুল ইসলাম, ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিজাম উদ্দিন আহমেদ, প্রকল্প ম্যানেজার মো. হোসেন, পিএসসি ও প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর নূর মো. সিদ্দিক সেলিম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
এসএ/জেডএস