সম্প্রতি প্রধান কার্যালয়সহ ঢাকার অফিসগুলোতে ৫৫ জন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে সারাদেশের কর্মকর্তাদেরও রদবদল করা হবে।
প্রথম সারির নন-লাইফ কোম্পানিগুলো কর্মকর্তাদের বদলিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে অসন্তোষ দেখাচ্ছে অনৈতিকভাবে তদবিরের মাধ্যমে সুবিধা আদায় করতে থাকা কোম্পানিগুলো।
বদলি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) সাহানা গণি (ঢাকা জোনের দাবি থেকে প্রধান কার্যালয়ের পুনঃবিমা), নজরুল ইসলাম (প্রধান কার্যালয়ের পুনঃবিমা থেকে দাবি বিভাগ), সাহিদুল হক (লোকাল থেকে প্রধান কার্যালয়ের পুনঃবিমায়), আনোয়ার হোসেন (প্রধান কার্যালয়ের পুনঃবিমা থেকে লোকাল অফিস)।
ম্যানেজার দিলারা পারভীন (ঢাকা জোনের দাবি থেকে প্রধান কার্যালয়ের দায়গ্রহণ বিভাগ), শ্যামল কুমার চাকমা (ঢাকা জোন-৫ থেকে ঢাকা জোনের অডিট বিভাগ), এ এফ এম শাহজালাল প্রধান কার্যালয়ের সংস্থাপন থেকে এসবিসি সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট), আব্দুল মতিন (এসবিসি সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট থেকে ঢাকা জোনের দাবি বিভাগ), মো. ইব্রাহিম লোকাল থেকে প্রধান কার্যালয়), মমতাজ হোসেন (ঢাকা জোন-১১ থেকে লোকাল অফিস ঢাকা জোন),বাকী বিল্লাহ (প্রধান কার্যালয়ের পুনঃবিমা থেকে ঢাকা জোন-১), এ এফ এম ফয়সাল ইসলাম (প্রধান কার্যালয়ের দাবি থেকে পুনঃবিমা বিভাগ), এএসএম জহিরুল ইসলাম (ঢাকা জোন-১ থেকে প্রধান কার্যালয়ের পুনঃবিমা) ও সুপ্রতিভ হালদার (জনসংযোগ ও প্রটোকল থেকে প্রধান কার্যলয়ের জনসংযোগ বিভাগ)।
এছাড়া ডেপুটি ম্যানেজার আব্দুল্লাহ মো. কাওছার, মাহফুজুর রহমান, খন্দকার মিলানুর রহমান, বিপ্লব দাস, কবিরুল ইসলাম, তৌহিদ উদ্দিন মো. সোহেল, রিপন কুমার সাহা, মনিরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, আরিফুল ইসলাম, মঞ্জুর মোরশেদ, মো. আব্দুল্লাহ, আব্দুল আউয়াল, মাহমুদ আলম, মোহাম্মদ আলী, খন্দকার আহসানুল আনোয়ার, খালেদ আহমেদ ফেরদৌস, এইচ এম আবু রায়হান ভূঁঞা, মো. শাহ আলম, বখতিয়ার, সুজন কুমার সাহা, খায়ের মুহাম্মদ জালাল; সহকারী ম্যানেজার মো. আরিফুর রহমান, একেএম আবুল হাশেম, এ বি এম মোকাব্বর হোসেন, আরাফুজ্জামান, আবুল কাশেম ভূঁইয়া, আবুল কাশেম, মাসুম রেজা, আব্দুল ওয়াহেদ, আনোয়ার হোসেন, আহমদ শরীফ চৌধুরী এবং জুনিয়র অফিসার সৈয়দ নাকীব হায়দার, আব্দুল হক, মো. আক্তারুজ্জামান, ডেজ এ আদনান, মহসীন কবীর, মিসেস মার্জিনা খাতুন, লোকমান হোসেন ও আবু জাফর মো. শামছুদ্দীনকেও বদলি করা হয়েছে।
বদলি এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ন্যূনতম ৫ বছর থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বিভাগের একটি কাজ করছেন। অথচ একই বিভাগের অন্যান্য কাজগুলো জানেন না, জানার কিংবা শেখার চেষ্টাও করছেন না। এই বিভাগের কাজে নতুন করে কোনো কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষিত করছেন না।
পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় থেকে অফিসকে নিজেদের ঘর-বাড়িতে পরিণত করেছেন। গ্রাহক ও বেসরকারি বিমা কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভাল আচরণের পরিবর্তে অসদাচরণ করছেন। এছাড়া নির্ধারিত পারসেনটেজ (ঘুষ) হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোনো কোম্পানির ফাইল ছাড়েন না। উল্টো যারা কাজ করছেন তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন।
কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরই কর্মকর্তাদের বদলির সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এসবিসি ও বিমা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এসবিসির কর্মকর্তাদের সব কাজে পারদর্শী করতে পারলে প্রতিষ্ঠানটিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। পাশাপাশি এসবিসি’র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। গ্রাহকরা এসবিসি’র সর্বোত্তম সেবা পাবে। বিমা কোম্পানি এবং গ্রাহকদের মধ্যে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হয়ে আসবে।
এদিকে, বদলি ঠেকাতে সহকারী জেনারেল ম্যানেজারসহ (এজিএম) কয়েকজন কর্মকর্তা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তদবির করে এসবিসির চেয়ারম্যান ও এমডির ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এসবিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বাংলানিউজকে বলেন, এসবিসির কাজে গতি আনার পাশাপাশি কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের নির্দেশক্রমে এই বদলি করা হয়েছে।
এর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এসব কর্মকর্তা এসবিসিতে দীর্ঘদিন ধরে একই বিভাগে একই কাজ করছেন। অথচ অন্যান্য বিভাগের কাজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই।
তিনি বলেন, সব কর্মকর্তাকে সব বিষয়ে পারদর্শী হিসেবে গড়ে তুলতে কিছু কর্মকর্তাকে শুধু টেবিল পরিবর্তন করা হয়েছে। কাউকে এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে বদলি করা হয়েছে। আর কিছু ব্যক্তিকে ঢাকার এক শাখা থেকে অন্য শাখায় বদলি করা হয়েছে। করপোরেশন পরিচালনার জন্য এগুলো সব সময় করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এমএফআই/এসকে/এইচএ/