ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আলুক্ষেতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ, চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে

মাহিদুল ইসলাম রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
আলুক্ষেতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ, চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে লেট ব্রাইট রোগে আক্রান্ত আলু গাছ

দিনাজপুর: কিছুদিন আগে রোপণ করা বীজ থেকে মাটি ভেদ করে বের হওয়া সবুজ গাছে ছেয়ে গেছে কৃষকের ক্ষেত।

আস্তে আস্তে সবুজ গাছগুলো সতেজ-সজিব হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে সন্ধ্যা থেকে রাতজুড়ে এমনকি দিনের বেলাতেও তীব্র শীতের পাশাপাশি আকাশ থেকে অঝরে ঝরছে ঘন কুয়াশা।

কুয়াশার শিশির বিন্দু পরার কারণে কৃষকের স্বপ্নের আলুক্ষেতে করেছে আক্রমণ। আক্রমণের ফলে আলুক্ষেতে ব্যাপক হারে ‘লেট ব্লাইট’সহ (পাতা পচা) শীতজনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। সবুজ আলু গাছের পাতা ফোসকা পড়ে বাদামি আবরণে হয়ে পচনের দিকে যাচ্ছে।

যা পরবর্তীতে গাছগুলো মারা যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ঘন কুয়াশার ফলে গাছের গোড়া পর্যন্ত পচে যাচ্ছে। ‘লেট ব্লাইট’ ও গোড়া পচন রোগ এক প্রকার ছত্রাক জাতীয় যা শীত ও কুয়াশার কারণে হয়ে থাকে।

এদিকে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চাষি তার স্বপ্নের আলুক্ষেতকে শীতজনিত কারণে ছত্রাক জাতীয় রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে ইতোমধ্যে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিচর্যা করতে শুরু করেছেন।

লেট ব্রাইট রোগে আক্রান্ত আলু গাছপ্রতিনিয়তই আলুক্ষেতে বালাইনাশক প্রয়োগ করে কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না চাষিরা। রোগ-বালাই থেকে আলুক্ষেত রক্ষা করতে না পারায় কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, সময় মতো সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে আক্রান্ত রোগের হাত থেকে আলুক্ষেতকে রক্ষা করা যাবে।

দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী এলাকার আলু চাষি মো. সেকেন্দার আলী বাংলানিউজকে জানান, এইতো ক'দিন আগেই বীজ থেকে মাটি ভেদ করে আলু গাছের চারাগুলো বড় হয়ে জমির চারপাশ সবুজে ভরে যায়। সবুজ গাছগুলো সতেজ-সজিব হয়ে বেড়ে ছিলো। লকলকিয়ে বেড়ে উঠতে থাকা আলুর গাছ হঠাৎ তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার 'লেট ব্লাইট'সহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছের গোড়া পচন ও পাতা ফোসকা পড়ে বাদামি আবরণে পরিবর্তন হয়ে পচনের দিকে যাচ্ছে।

শীতজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী পরিচর্যা ও বালাইনাশক প্রয়োগ করতে শুরু করেছি। গত কয়েকদিন বালাইনাশক প্রয়োগেও কোনো প্রতিকার পায়নি। তবে কৃষি বিভাগ আরো কয়েকদিন বিভিন্ন বালাইনাশক প্রয়োগের কথা বলেছে। এরপরই স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

আক্রান্ত গাছের পাতা দেখাচ্ছেন কৃষকজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৪৬ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আলু রোপণ শেষে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫০ হাজার ৭৪ হেক্টর জমিতে রোপণ করা হয় আলুর বীজ। এবারে আলু চাষের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন ভালো হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

বর্তমানে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় আলুক্ষেত যেসব রোগে আক্রান্ত হয়েছে সঠিক পরিচর্যা করলে গাছ আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আলুর বাম্পার ফলন হবে আশা করা যাচ্ছে। আলু চাষ শুরু থেকে উৎপাদন পর্যন্ত কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।