ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মাতারবাড়ি প্রকল্পে আরও ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিলো জাপান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
মাতারবাড়ি প্রকল্পে আরও ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিলো জাপান

ঢাকা: কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে আরও ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিলো জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। ৪০তম ঋণ প্যাকেজের আওতায় এ ঋণ দিলো সংস্থাটি।

রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে একটি বিনিময় নোট ও ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।  

বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়েচু ইজুমি ও জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হিতোশি হিরাতা চুক্তিতে সই করেন।

এই ঋণের বাৎসরিক সুদের হার প্রকল্প নির্মাণকাজের জন্য ০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পরামর্শক সেবার জন্য ০ দশমিক ০১ শতাংশ ধরা হয়েছে। ঋণ পরিশোধকাল ধরা হয়েছে ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর।
 
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ‘কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড’ (সিপিজিসিবিএল)। ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি দেশের এই মুহূর্তের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে বিদেশি অর্থায়ন (জাইকা) থেকে আসছে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা, সরকারি খাত থেকে ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
 
দু’টি ইউনিট থেকে ৬০০ করে মোট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে মাতারবাড়ি কেন্দ্রে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সম্পূর্ণভাবে আমদানিকৃত কয়লার ওপর নির্ভরশীল। প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ৭০০ কেজি স্ট্যান্ডার্ডের প্রয়োজনীয় পরিমাণ কয়লা আমদানি করা হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে প্রতি টন কয়লার দাম ১০ হাজার ২৫৫ টাকা ৫০ পয়সা ধরা হয়েছে। দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কুলিং এবং স্টিম জেনারেশনের জন্য সমুদ্রের সারফেস ওয়াটার ব্যবহার করা হবে। জাইকার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার প্রাথমিক কথা হয় ২০২০ সালে। এখন নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে।

ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, পর্যায়ক্রমে জাইকা প্রকল্পের আওতায় ঋণ দিচ্ছে। ইতোপূর্বে ৩৫তম, ৩৭তম, ৩৮তম এবং ৩৯তম ঋণ প্যাকেজের চুক্তি সই হয়েছে। দ্বি-পাক্ষিক পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে জাপান এ পর্যন্ত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে ঋণ দিচ্ছে।
 
এছাড়াও আরও দু’টি প্রকল্পের আলাদা আলাদা ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। এর মধ্যে ‘দ্য প্রজেক্ট ফর দ্য ডেনসিফিকেশন অব গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম কন্টিনিয়াসলি অপারেটিং রিফারেন্স স্টেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড দ্যা মর্ডানাইজেশন অব টাইডাল স্টেশনস ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ৯৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে নির্ভুল জরিপ এবং ম্যাপিংয়ের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা হবে। প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
 
আর ‘দ্য প্রজেক্ট ফর হিউম্যান রিসোর্স ডেভলপমেন্ট স্কলারশিপ’ প্রকল্পের আওতায় হয়েছে ৮৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকার ঋণ চুক্তি। প্রকল্পটি ২০০১ সালে শুরু হয়েছে, চলবে ২০২০ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় বিসিএস ক্যাডার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বৎসর মেয়াদী মাস্টার্স কোর্সের জন্য বৃত্তি দেওয়া হবে।  এ পর্যন্ত ২৯৩ জন সরকারি কর্মকর্তা জাপানে বিভিন্ন কোর্সে মাস্টার্স প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ৬০ জন অধ্যায়নরত এবং ৩০ জন কর্মকর্তা সর্বশেষ ব্যাচে জাপানে অধ্যয়নের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
 
সব মিলিয়ে তিনটি প্রকল্পে জাইকার সঙ্গে মোট ১১ হাজার ১৭৮ কোটি ৯ লাখ টাকার ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এমআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।