মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা। এরইমধ্যে জেলার সবচেয়ে বড় ও দামি গরুর কথা ছড়িয়ে পড়ায় ক্রেতা ও উৎসুক জনতা প্রতিদিনই সৈকতের খামারে ভিড় জমাচ্ছে।
নিজ বাড়ির সামনে রাস্তার বিপরীত পাশেই সৈকতের গরুর খামার। তার আদরের লালু-কালুর বিষয়ে বিস্তারিত বলেন বাংলানিউজকে।
তিনি বলেন, দেশে উচ্চ শিক্ষা শেষে যুক্তরাজ্যে চলে যাই। সেখানে ৬ বছর থেকে ২০১৬ সালে বাড়িতে আসি। বাড়িতে এসে মৎস্য খামার ও গরুর ফার্ম শুরু করি। তার ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে বাগেরহাট সদর উপজেলার শ্রীঘাট এলাকার এক খামারির কাছ থেকে লালু-কালুকে ক্রয় করি। নিজের খামারে এনে তাদের যত্নসহকারে লালন-পালন শুরু করি। খামার পরিচর্যার জন্য আলাদা লোক থাকলেও সার্বক্ষণিক নিজে তদারকি করি লালু-কালুর। দেখতে দেখতে লালু-কালু বড় হতে থাকে। আমার খুব আদরের এ গরু দু’টি। লালু-কালুর চেহারা দেখলে আমার প্রাণ জুড়িয়ে যায়। তারপরও নিয়ম অনুযায়ী এ বছর আমি লালু-কালুকে বিক্রি করব। দশ লাখ টাকা দাম চেয়েছি, ইতোমধ্যে অনেক ক্রেতা এসেছে। একজন ছয় লাখ টাকা দামও বলেছে। আশা করি কোরবানি যত ঘনিয়ে আসবে আমার লালু-কালুর দামও বাড়বে। কাঙ্ক্ষিত দামেই লালু-কালুকে বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
সৈকত আরও বলেন, খামারে লালু-কালুকে সব ধরনের দেশীয় খাবার খাওয়ানো হয়েছে। ভুসি, কুড়া, খৈল, ডালের পানি, কাঁচা ঘাস, চিটেগুড়সহ সব প্রকার দেশীয় খাবার খেয়ে বড় হয়েছে আমার লালু-কালু। মোটা তাজাকরণের জন্য কোনো প্রকার কৃত্রিম হরমোন বা খাবার খাওয়ানো হয়নি লালু-কালুকে।
লালু-কালুর পরিচর্যাকারী সিরাজুল ইসলাম বলেন, গরু দুইটা আমাদের পরিবারের সদস্যদের মতো আপন হয়ে গেছে। সকালে উঠে ওদের থাকার জায়গা পরিষ্কার করে খাবার দেই। দুপুরের আগেই গোসল করিয়ে শরীর মুছে দেই। গরমের সময় ফ্যান চলে সর্বক্ষণ আর বিদ্যুৎ না থাকলে হাতপাখা দিয়েও বাতাস করি ওদের। সব সময় ওদের দিকে আমার খেয়াল থাকে।
স্থানীয় বৃদ্ধ সিদ্দিকুর রহমান ও ইদ্রিস নকীব বলেন, গরু দুটি দেখতে প্রতিদিন অনেক লোক আসে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে গরুর ক্রেতারা আসা শুরু করেছে। গরু দু’টির চেহারা অনেক ভালো লাগে।
শহিদুল ইসলাম, রব নকীব, ফয়সাল শেখসহ কয়েকজন বলেন, আমাদের এলাকায় এত বড় গরু আর কখনও হয়নি। আমরা মাঝে মাঝেই এসে গরু দুটো দেখে যাই। আমাদের খুব ভালো লাগে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) ডা. লুৎফর রহমান বলেন, সৈকতের খামারের গরু দুটো এবছর বাগেরহাট জেলার সব থেকে বড়। এজন্য আমরা গরু দুটোর প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছি। প্রয়োজন অনুযায়ী কৃমিনাশক ওষুধ ও প্রতিশেধক টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো প্রকার মাংসবর্ধক হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক তাদের পুশ করা হয়নি। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারে পালিত এ গরুর মাংস শতভাগ নিরাপদ। এবারের কোরবানিতে ভালো দামে গরু দুটি বিক্রি করে খামারি লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৯
এসএইচ