ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সংস্কারে ব্যাংক-বিমার উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা কমানো সম্ভব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৯
সংস্কারে ব্যাংক-বিমার উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা কমানো সম্ভব

ঢাকা: দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে ছোটবড় যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা ব্যাংক ও বিমা খাতে সংস্কারের মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব। একই সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত মধ্য ও উচ্চ আয়ের দেশ হতে হলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে। আর উদ্যোক্তা গড়ে তোলার জন্য অনুকূল রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ ব্যবসাবান্ধব করা প্রয়োজন। 

শনিবার (০৩ আগস্ট) ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স (ডিএসসিই) আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ বক্তারা এসব কথা বলেন।  

সেমিনারে ‘ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স প্রসিডিউরস অ্যান্ড হিন্ডারেন্স ফর এন্টারপ্রেনিউরিয়াল ইকোনমিক্স গ্রোথ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহ-সভাপতি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের (আইএফআইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এজেডএম সালেহ।

 

সভাপতিত্ব করেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের উদ্যোক্তা অর্থনীতি বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী।  

অনুষ্ঠানে পূবালী ব্যাংকেরর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, নিজের কর্মসংস্থান ও দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে উদ্যোক্তা হওয়ার বিকল্প নেই। উদ্যোক্তা হতে হলে ঝুকি নিতে হবে, জ্ঞান অর্জন করতে হবে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার সক্ষম হতে হবে। ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিৎ নতুনদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।  

মেঘনা ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, অর্থনীতিতে বৈষম্য থাকবে এটি স্বাভাবিকভাবে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বৈষম্য অস্বাভাবিক। এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে বৈষম্য  তৈরি করা হচ্ছে। একগোষ্ঠীকে নানাভাবে সব ধরনের ব্যবসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই বৈষম্যের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।  

তিনি বলেন, দেশে উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়োজন। কিন্তু উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি গড়ে উঠেনি। উদ্যোক্তাদের জন্য গড়ে তোলা ইইএফ ফান্ড নষ্ট হয়েছে। উদ্যোক্তারা ব্যর্থ হলে ‘এক্সিট পলিসি’ নেই। তবে দেশ এগোতে হলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা প্রয়োজন। এজন্য যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদেরও নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে ও ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে।  

অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, দেশের অর্থনীতি ব্যাংক ও বিমা খাত অবদান রাখছে। তবে কিছু সঙ্কট চলছে। সেই সঙ্কট নিরসন করে বিমা খাতকে জনপ্রিয় করতে হবে এবং ব্যাংকখাতকে উদ্যোক্তাবান্ধব করতে হবে। এসএমই ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাংক ও বিমা প্রসারের সুযোগ অনেক। নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের তৈরি ব্যাংক খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।  

মূল প্রবন্ধে এজেডএম সালেহ বলেন, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা অনেক চ্যালেঞ্জের। ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব রয়েছে নতুন উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য। নতুন ব্যবসা ও শিল্প গড়ে তুলতে যেসব বাধা-বিপত্তি আসে তা সরকারের নীতির মাধ্যমে দূর করতে হবে।  

‘সরকারি নীতি যেন উদ্যোক্তাদের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে। পাশাপাশি ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিৎ উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের উদ্যোগ সফল করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ’ 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্টের (বিআইপিডি) মহাপরিচালক কাজী মুর্তজা আলী বলেন, উচ্চ সুদহার উদ্যোক্তাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এতে ব্যবসার খরচ বাড়ছে। দেশের বর্তমান রাজস্ব নীতি সঞ্চয় প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করছে। আর সঞ্চয় কমে গেলে বিনিয়োগের তহবিল কমে যাবে।  

তিনি বলেন, দেশে জিডিপি বাড়ছে। পাশাপাশি বাড়ছে বৈষম্য। এটি অর্থনীতির বড় দুর্বলতা। এই বৈষম্য সামাজিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৯
এসই/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।