হাটে ছোট আকারের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। মাঝারি আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা।
বুধবার (০৭ আগস্ট) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার গরুর নতুন হাট ঘুরে এমন চিত্রের দেখা মিললো। তবে দেশি গরুর দিকেই নজর বেশি ক্রেতাদের। তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশি জাতের মাঝারি গরু।
পশুর হাটেই আলাপ হয় উপজেলার একটি গ্রাম থেকে আসা গৃহস্থ আবু বক্কর সিদ্দিকের (৫০) সঙ্গে। তিনি তার ষাঁড় গরুর দাম হাঁকিয়েছেন ২ লাখ টাকা। কিন্তু বিক্রেতারা দাম করছেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তবে কম দামে গরু বিক্রি করতে রাজি নন তিনি।
জানতে চাইলে আবু বক্কর সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, গরুর লালন-পালন খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে পরিবহন খরচ। নির্ধারিত দাম না পেলে তিনি চাঁদ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর, নগরীসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা এ হাটে গরু কিনতে ভিড় করছেন। অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে গরু মিলবে এমন ভরসা থেকেই মূলত নগরীর বাসিন্দারা এ হাটে ছুটছেন। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় না ঘটায় উপজেলার এ গরুর হাট থেকে বেজার মুখে ফিরে যাচ্ছেন তারাও।
উপজেলার জোরবাড়িয়া গ্রামের মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন নিজের ছোট আকারের ষাঁড়ের দাম প্রত্যাশা করছেন ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার দরদামের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাহিদামতো দাম পাননি। বিকেল গড়াতেই ৪৮ হাজার টাকায় শেষ পর্যন্ত গরুটি বিক্রি করেছেন এ গৃহস্থ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, হাটে গরু বা ক্রেতা কোনোটিরই অভাব নেই। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বেশিরভাগ গৃহস্থই গরু বিক্রি করছেন না। দু’একদিনের মধ্যেই হাটের এ চিত্রের পরিবর্তন হবে বলে আশা তাদের।
হাটে গরু কিনতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার গরুর বাজার চড়া। নগরীর সার্কিট হাউজের প্রধান গরুর হাট এখনো না বসায় সবাই গ্রামের হাটগুলোতে ভিড় করছেন। তবে নগরীর বাসা-বাড়িতে গরু রাখার মতো জায়গা না থাকায় লালন-পালনের ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতেই এখনি গরু না কিনে দরদাম যাচাই-বাছাই করছেন।
নগরীর মাসকান্দা এলাকা থেকে আসা আরিফুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি জানান, গতবারের চেয়ে এবার দাম বাড়তি। ফলে অনেকেই হাটে আসছেন আর দাম যাচাই করে বাড়ি ফিরছেন। নিজেও একইপন্থা অবলম্বন করছেন বলেও জানালেন।
দেখা গেছে, এ হাটে কোনো বিদেশি গরু নেই। তবে মোটাতাজা করা গরুর উপস্থিতি রয়েছে। ক্রেতাদের কাছেও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা রয়েছে। বড় আকারের গরুর দিকে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। গরুমোটাতাজা সম্পর্কে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েও সতর্ক ও সচেতন রয়েছেন।
উপজেলার কেশরগঞ্জ এলাকা থেকে গরু বিক্রেতা সোহরাব আলী (৫০) বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতিকারক ওষুধ খাওয়ালে গরু টিকে না। তাই খড়, ভূষি ও খইল খাওয়ানো হয়েছে। কোনোরকম ওষুধ খাওয়ালে ধরা খেতে হয়। তাই এবার কোরবানির জন্য ফিট গরুর দিকেই মনোযোগ দিয়েছেন গৃহস্থ ও বেপারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৯
এমএএএম/জেডএস