শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকালে সিলেটের বৃহত্তম পশুর হাট কাজিরবাজার ঘুরে দেখা যায়, পর্যাপ্ত কোরবানির পশু থাকলেও ক্রেতাদের দেখা নেই। অনেকেই আবার হাটে এলেও ঘুরে ঘুরে দেখছেন।
সেখানে কথা হয় বাজিরবাজারের গরুর ব্যাপারী আব্দুস সুবহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের ধারণা, বাজার যে পরিমাণ গরু আছে, বিক্রি শুরু হলে সংকট সৃষ্টি হবে। তাতে বাজারে গরুর দাম আকাশ-পাতালসম থাকবে। আর শেষ সময়ে আমদানি বেশি হলে ধস নামবে, দাম অর্ধেকে নেমে আসতে পারে। তাই এবারের গরুর বাজার যথারীতি জুয়া খেলার ন্যায় ধরে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এসময় তিনি শুক্রবার বিকেল থেকে হয়তো গরু বিক্রি শুরু হবে। শনিবার (১০ আগস্ট) পুরোদমে বাজার জমে ওঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ভিন্ন কথা শোনালেন গরু ব্যবসায়ী জুবের মিঞা। তিনি বলেন, নগরে বাসা-বাড়িতে গরু বা কোরবানির পশু রাখা ও পরিচর্যার জায়গা নেই, তাই শেষ সময়ে বিক্রি শুরু হতে পারে। বাজারে এখন যে পরিমাণ গরু আছে, তাতে সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
জেলা প্রশাসন ও পরিষদ সূত্র জানা যায়, এবার সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে নগর এলাকায় ৩টি ও জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখা থেকে ২১টি পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও জেলা পরিষদ থেকে বেশ কয়েকটি পশুরহাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৭১টি হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে।
কাজিরবাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ কেউ সপ্তাহ/দশ দিন আগে থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এখনও কোনো গরু বিক্রি করতে পারেননি।
ব্যাপারী আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ৭০টি গরু নিয়ে কাজিরবাজার এসেছেন। এখনও একটিও বিক্রি করতে পারেননি। তবে তাতে হতাশ নন। আশা করি ঈদের শেষ সময়ে বাজারে ক্রেতা সমাগম ঘটবে। কারণ এখন গরম বেশি। তাই শহরের মানুষ গরু কিনে নিয়ে পরিচর্যা করা কষ্টসাধ্য, যে কারণে ঈদের আগের দিন বা একদিন আগে কোরবানির পশু কিনবেন।
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে বাজারে গরু আসছে না। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় খামার থেকেই কিনছেন অনেকে।
ঝিনাইদহ থেকে ৪৫টি গরু নিয়ে আসা আফজল হোসেন এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে ২৫টি গরু নিয়ে কাজিরবাজারে আসা ব্যবসায়ী মেতালেব হোসেন বলেন, বাজারে গরু আছে ক্রেতা নেই। তবে দাম ছাড়ছেন না। কারণ শনি ও রোববার এ দুই দিন বিক্রি বাড়বে।
গরু কিনতে আসা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা জোবায়ের আহমদ বলেন, বাজারে ক্রেতা কম থাকলেও গরুর দাম বেশি। ছোট একটি গরু কিনতে হাসিলসহ ৬৯ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। অথচ গরুর সাইজ অনুযায়ী দাম বেশি। এবার এ অবস্থা থাকলে অনেকে কোরবানি নাও দিতে পারেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) রাতে নগরের চৌকিদেখি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পশুতে ভরে গেছে বাজার, কিন্তু ক্রেতা নেই। কেবল আট-দশজন ক্রেতা ঘুরছেন এদিক-ওদিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৯
এনইউ/ওএইচ/