মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামী ব্যাংক জানায়, সেমিনারে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ান দেশগুলোর উল্লেখযোগ্য পেশাবিদ, হিসাববিজ্ঞানীসহ অন্যরা অংশ নেন। ড. সেলিম দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও হিসাববিজ্ঞান মান (অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড) কমিটির সদস্য হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন।
প্রবন্ধে ড. সেলিম বলেন, টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নসহ দারিদ্র্য বিমোচন, আয় বৈষম্য, সামাজিক, মানসিক ও মানবিক ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি, তথা সামগ্রিক উন্নয়নের অন্যতম বাধা হচ্ছে দুর্নীতি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ছয় বিলিয়ন লোক দুর্নীতি সমস্যায় জর্জরিত। একইভাবে, বিশ্বের ৬৮ শতাংশ দেশে দুর্নীতির বিভিন্ন ইস্যুগুলো গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ড. সেলিম তার প্রবন্ধে সারাবিশ্বে আলোচিত ৫৩টি দুর্নীতি বিরোধী কর্মকৌশলের ওপর আলোকপাত করে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন কর্মপদ্ধতি, আইন ও সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, কমপক্ষে ৩০টির বেশি আইনি কাঠামো বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন, নিবারণ, নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষায় প্রয়োগ রয়েছে। জাতীয় শুদ্ধাচার নীতি, দুর্নীতি বিরোধী জাতিসংঘের কনভেনশন, তথ্য কমিশন, দুর্নীতি দমনে নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রমের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন ড. সেলিম। এসব তথ্যের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৮ সালে অভিযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে হটলাইন ১৭ লাখ ১৮ হাজার ৭৩৬টি ফোনকল গ্রহণ করে ও এর মধ্যে ১৪৪টি অনুসন্ধানের জন্য বিবেচিত হয়। এছাড়া, ২০১৮তে মোট প্রাপ্ত অভিযোগ ১৬ হাজার ৬০৬টি, এর মধ্যে ১ হাজার ২৬৫টি অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়।
ড. সেলিম আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি বিরোধী অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মকৌশল গ্রহণ করেছে, যেগুলো দুর্নীতি বিরোধী মতবাদ গড়ে তুলতে সহায়ক হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে সারাদেশে ৩ হাজার ৭৩৬টি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, ২৬ হাজার ১২৩টি সততা সংঘ ও ১ হাজার ৯৭২টি সততা স্টোর গড়ে তোলা হয়েছে, যেগুলো উত্তম চর্চাসহ দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব গড়তে ভূমিকা পালন করেছে। দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, সততা সংঘ ও স্টোরগুলো ২০১৮তে প্রায় ১৭ হাজার ৮৬৬টি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। কার্যক্রমের মধ্যে আলোচনা সভা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, মানববন্ধন, সেমিনার, র্যালি, নাটক, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তৃতা ইতাদি সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে।
ড. সেলিম বলেন, প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার, সততা, নিষ্ঠা, নৈতিকতাসহ উত্তম চর্চার ব্যাপক প্রসারসহ দুর্নীতির বিরুদ্ধে তীব্র সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টির মাধ্যমে দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ, নিবারণ সম্ভব। এছাড়া দুর্নীতি দমনের প্রতিটি কার্যক্রমকে সবাই সামাজিক কল্যাণ সাধনের জন্য দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৯
এসই/একে