এমনকি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলাও করেছেন চাকরিচ্যুত হওয়া ওই নারী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বদলির পর থেকে মনিরা সুলতানা পপি দীর্ঘদিন কর্মস্থলে কোনো ধরনের পূর্ব অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের নিয়ম ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাকে তিনবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে নোটিশ পাঠায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তারপরও তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় এবং অননুমোদিত অনুপস্থিত থাকায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে অব্যহতি পান।
বর্তমানে প্রভিডেন্ট ফান্ড ঋণ, হাউজ বিল্ডিং ঋণ, ক্রেডিট কার্ড ও গাড়ির ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ খাতে মনিরা সুলতানা পপির কাছে তার চাকুরিরত থাকাকালে যাবতীয় প্রাপ্ত টাকা সমন্বয় করার পরও ব্যাংকের প্রায় ১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এসব ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য তাকে নোটিশও দেয়।
ব্যাংক সূত্র বলছে, নোটিশের উত্তর তো পপি দেন-ই নি। উল্টো সিটি ব্যাংক এবং ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনাম, সম্মানহানি, ব্ল্যাকমেইল করাসহ ব্যক্তিগত ক্ষোভ চরিতার্থ, অন্যায় ও অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন। এরই অংশ হিসেবে সিটি ব্যাংকের এমডি মাশরুর আরেফিন, হেড অব সিএসআরএম আব্দুল ওয়াদুদ ও কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ কাফির বিরুদ্ধে গুলশান থানায় যৌন হয়রানির মামলা করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন মনিরা সুলতানা পপি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সিটি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে মোট ২৫০ দিন নিয়মবহির্ভূতভাবে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ব্যাংকের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন মনিরা সুলতানা পপি। যা ব্যাংকের তদন্তেও বেরিয়ে এসেছে।
সিটি ব্যাংকের একাধিক ড্রাইভারের লিখিত জবানবন্দিতে জানা যায়, এসব গাড়ি পপি বিভিন্ন আপত্তিকর কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেন। এমনকি পপি ব্যাংকের কাছে ইতোমধ্যে ৫ কোটি টাকা পাবেন দাবি করে তার পদে প্রমোশনসহ পুনর্বহালের দাবি জানান। যা সম্পূর্ণ ব্ল্যাকমেইলের শামিল।
এসব ঘটনায় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মনিরা সুলতানা পপির বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় একটি মামলা করেছেন সিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের লিগ্যাল ডিভিশনের হেড অব কোর্ট অপারেশন একেএম আইয়ুব উল্লাহ।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা পপি চাকরিতে পুনর্বহালসহ নগদ ৫ কোটি টাকা ও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবি করেছেন। এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে এমডিকে চাকরি করতে দেবেন না এবং নানাভাবে হয়রানি করারও হুমকি দেন।
এমনকি এমডির সম্মানহানি করার হুমকিও দিয়েছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স ম কাইয়ূম বলেন, সিটি ব্যাংকের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে এর তদন্তও শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
এসই/এমএ