তিনি বলেছেন, এফটিএ’র জন্য মার্কোসারভুক্ত চার দেশ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের সস্মতি প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে আগামী ডিসেম্বরে তারা একটি সভা করে আমাদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মার্কোসারভুক্ত দেশগুলো সফর নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা বলেন। এসময় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের এ সফরের মূল উদ্দেশ্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিষয়ে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সমর্থন আদায় ও দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন। এ সফরে চারটি দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে ১৭টি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ অর্থনীতি ব্রাজিলের সাঁও পাওলোতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষযে একটি সেমিনারে অংশ নিয়েছি। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মার্কোসার সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রতিটি দেশ এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় এবং যথাসময় এ বিষয়ে কারিগরি আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেয়।
তিনি বলেন, সফরকালে দেশগুলোর বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানানো হয়। বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ সফরে বিজিএমইএ ও ব্রাজিলের সর্ববৃহৎ ব্যবসা সংগঠন সাঁও পাওলো চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। তুলা রপ্তানিকারকদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের ওপর ১৯৯২ সালে ব্রাজিল আরেপবত অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি প্রত্যাহারের বিষয়টি ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
মন্ত্রী বলেন, ব্রাজিলের সঙ্গে ব্যাণিজ্য বাড়াতে আগামী ৭ থেকে ৮ নভেম্বরে ব্রাজিলের সাঁও পাওলোতে একক দেশ হিসেবে তৈরি পোশাক নিয়ে একটি মেলা ও ফ্যাশন শো আয়োজন করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় এ মেলার লিড দেবে এফবিসিসিআই। মেলায় তৈরি পোশাকসহ সব ধরনের পণ্য প্রদর্শীত হবে। এছাড়া পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট খাতগুলো চিহ্নিত করতে আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে দু’টি যৌথ কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সবার মতৈক্য হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, ব্রাজিল সরকারের কাছে চলমান ৩৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে বা শুল্কমুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। উচ্চ হারে আমদানি শুল্ক থাকার কারণে বাংলাদেশ আশানুরূপ তৈরি পোশাক ব্রাজিলে রপ্তানি করতে পারছে না। শুল্ক কমানো হলে ব্রাজিলের মানুষ কম মূল্যে বিশ্বমানের বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কিনতে পারবে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বাংলাদেশ বিশ্বমানের তৈরি পোশাক উন্নত বিশ্বে রপ্তানি করছে।
এছাড়া বিদ্যমান আমদানি শুল্কহার কমাতে ব্রাজিলের ব্যবসায়ীদেরও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ব্রাজিল সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। উভয় দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে এ আমদানি শুল্কহার কমানো সম্ভব। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য ব্রাজিলের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত ২০ থেকে ২৪ আগষ্ট দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্যিক জোট মার্কোসার দেশগুলো সফর করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
জিসিজি/টিএ