তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সদিচ্ছার অভাবেই এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মার্কোসারভুক্ত দেশগুলোতে সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন মন্ত্রী।
এসময় বাণিজ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহে সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করার পরও তারা মানলেন না। তাই কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বারবার বলা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা সরকারি নির্দেশনা মানেন নি। তাই আগামী বছর যেন কাউকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি পড়তে না হয় এবং যেন সাধারণ মানুষকে চামড়া নষ্ট করতে না হয় সেজন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে।
তিনি বলেন, চামড়া নিয়ে এবার আমার শিক্ষা হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়। যাতে কাঁচা চামড়া নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়। তবে এবার চামড়া সংগ্রহে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ছিলো না।
এসময় বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি কেবিনেটে যে নীতিমালা হয়েছে সে আলোকে কাজ করা হচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে যাতে ব্যবসায়ীরা মূল্য পায় সে জন্য কাঁচা চামড়া রপ্তানি করা হবে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, পেঁয়াজ আমদানি নির্ভর। ভারতের বন্যার কারণে ১২ টাকার কেজি পেঁয়াজ ২৫ টাকা হয়ে গেছে। সেই প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে পড়ে। তবে যে পরিমাণে দাম বাড়ানো হয়েছে তাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না। ঈদের ১৫ দিন আগে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তখন আমাদের তদারকিতে দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এখনও মনিটরিং চলছে। আশা করছি, পেঁয়াজের দাম নিয়ে তেমন কোনো সমস্যা তৈরি হবে না।
এদিকে রোববার (২৫ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রপ্তানি সম্ভাবনাময় চামড়া খাতের উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রপ্তানিযোগ্য চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের গুণগতমান বজায় রাখার লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের। এ বিষয়ে চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।
উল্লেখ্য, সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া দাম অনুযায়ী ঢাকায় কোরবানির গরুর প্রতিটি ২০ থেকে ৩৫ বর্গফুটের চামড়া লবণ দেওয়ার পরে ৯০০ থেকে এক হাজার ৭৫০ টাকায় কেনার কথা ট্যানারি মালিকদের। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় চামড়া কিনেছেন। আর রাজধানীর বাইরে দেশের অন্যান্য স্থানে চামড়া বেচা-কেনা হচ্ছে আরও কম দামে। ফলে এবার কোরবানির পশুর চামড়া ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ না করায় তৃনমুল পর্যায়ে হাজার হাজার পিস চামড়া মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২১৯
জিসিজি/ওএইচ/