বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়। ‘সাপোর্ট টু সিউইড কাল্টিভেশন, প্রসেসিং অ্যান্ড মার্কেটিং থ্রো অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট’ ও ‘সাসটেইনেবল সয়েল ম্যানেজমেন্ট ফর নিউট্রিশন সেনসিটিভ অ্যাগ্রিকালচার ইন সাব-সাহারান আফ্রিকা অ্যান্ড সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রকল্প দু’টিতে অনুদানের চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ ও এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন।
সাসটেইনেবল সয়েল ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের আওতায় মাটির গুণাগুণ বাড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে নানা ধরনের প্রযুক্তি শেয়ার করবে এফএও। এগুলো কৃষি জমিতে প্রয়োগ হবে। সারাদেশে জরিপের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মাটির গুণাগুণ বাড়লে পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপক গতি আসবে। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। এ প্রকল্পে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা অনুদান দেবে এফএও।
সিউইড কাল্টিভেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ১৯টি উপকূলীয় জেলায়। এর আওতায় ওইসব এলাকায় সামুদ্রিক শৈবাল চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা অনুদান দেবে এফএও।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ১৪০ প্রজাতির শৈবাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৮ প্রজাতির শৈবাল বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কিছু উপকূলীয় জেলায় শৈবাল চাষ হচ্ছে। পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে উন্নত বিশ্বে এ ধরনের শস্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ সাগরশস্য থেকে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব। এক্ষেত্রে দেশের যে ৭১০ কিলোমিটারব্যাপী সমুদ্র সৈকত এবং ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটারব্যাপী উপকূলীয় অঞ্চল রয়েছে, সেখানে বাণিজ্যিকভাবে সামুদ্রিক শৈবাল চাষ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। মাছের পাশাপাশি এ সামুদ্রিক শৈবাল চাষকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতে পারে বাংলাদেশের অফুরান ব্লু-ইকোনমি।
কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হলে সামুদ্রিক শৈবালই হতে পারে আগামী দিনের পুষ্টির ভাণ্ডার। বর্তমানে ১৮০ জন চাষী ১০টি গ্রুপে ভাগ হয়ে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের শাহ্পরীর দ্বীপ ও জালিয়াপাড়া এলাকায় নাফ নদীর তীরে এবং উখিয়ার ইনানী এলাকার রেজু খালের তীরে শৈবাল চাষ করছেন। এফএও’র অনুদান শৈবাল চাষ বৃদ্ধিসহ বাজারজাতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, এফএও কতো অনুদান দিচ্ছে এটা মুখ্য বিষয় নয়। তারা (এফএও) উন্নত প্রযুক্তি আমাদের কাছে এনে দিচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে। তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার কৃষিখাতে অনেক উন্নয়ন বয়ে আনবে। এটা কৃষিখাতের জন্য জরুরি। প্রকল্প দু’টি একদিকে কৃষিজমির স্বাস্থ্যগুণ বাড়াবে, অন্যদিকে পুষ্টি নিশ্চয়তা দেবে। এসডিজির অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সরাসরি অবদান রাখবে প্রকল্প দুটি।
সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশে ‘সামুদ্রিক শৈবাল’ একটি গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ হিসেবে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। সামুদ্রিক শৈবাল চাষে উপকূলবাসীর আর্থিক সচ্ছলতার নতুন পথও উন্মুক্ত হবে। সামুদ্রিক শৈবালই হতে পারে আগামী দিনের পুষ্টির ভাণ্ডার।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এমআইএস/এইচএ/