বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ। এসময় এডিবি’র টিম লিডার (বহিঃ সম্পর্ক বিভাগ) গোবিন্দ বার উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবি’র সাক্ষাত প্রসঙ্গে গোবিন্দ বার বলেন, আমরা তিন বছরের একটা পরিকল্পনা করে থাকি, কোন কাজগুলো বাস্তবায়ন করবো। এই পরিকল্পনায় ঢাকা-সিলেট ফোরলেন প্রকল্প রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছি ঢাকা-সিলেট ফোরলেনে অর্থায়ন করবে এডিবি।
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ঢাকা-সিলেট চারলেন নির্মাণের পিডিপিপি (প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর আগে ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট রোড টু ফোরলেন হাইওয়ে অ্যান্ড কন্সট্রাকশন অব সার্ভিস লেন অন বোথ সাইড’ প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রকল্পটির পিডিপিপি অনুমোদন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ১৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির অনুকূলে বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল ইআরডিকে।
স্বল্পসময়েই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সহযোগী খুঁজে পেয়েছে ইআরডি। ইআরডি সূত্র জানায়, এরইমধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ জানিয়েছেন, প্রকল্পে যত ব্যয় হবে সবই অর্থায়ন করবে এডিবি। প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি, মূল প্রকল্প প্রণয়ন ও ঋণ নেগোসিয়েশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছে সংস্থাটি।
মূল সড়কের উভয়পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য পৃথক সার্ভিস লেন নির্মিত হবে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাঁক সরলিকরণসহ অধিকমাত্রার ট্রাফিক বিবেচনায় এনে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ নিশ্চিত করা হবে। শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এশিয়া হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডোর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চারলেনটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
প্রকল্পের আওতায় পৃথক সার্ভিস লেনসহ সড়ক নির্মাণে অতিরিক্ত ৯৮৬ দশমিক ৪৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর জন্য মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটি স্থানান্তর করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১ হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস।
নতুন পরিকল্পনায় চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস, ৪২টি ফুটওভার ব্রিজ, তিনটি ট্রাক স্ট্যান্ড এবং দু’টি রেস্ট হাউজ থাকবে সড়টিতে। সিলেট চা উৎপাদনে ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। বর্তমানে এখানে বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। সিলেটে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ও সার কারখানা। সিলেটের পাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রচুর তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে। এসব কারণে এডিবি অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে চারলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯
এমআইএস/জেডএস