ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাইকারি ও খুচরা সবজি বিক্রিতে ব্যবধান তিনগুণ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯
পাইকারি ও খুচরা সবজি বিক্রিতে ব্যবধান তিনগুণ! কারওয়ান বাজারে শাক-সবজির অভাব নেই। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ করছে নানা ধরনের শাক-সবজি। এসব পণ্য পচনশীল হওয়ায় দিন ভেদে দামের পার্থক্য থাকে প্রতিনিয়ত। তবে, এ চিত্র শুধু পাইকারি বাজারের, খুচরা বাজারের অবস্থা একেবারে ভিন্ন। সেখানে পণ্যের দাম একবার বাড়লে কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। বাজার ভেদে শাক-সবজির দামের ব্যবধান দ্বিগুণ বা তার চেয়েও বেশি।

এদিন কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পটল বিক্রি করতে দেখা গেছে ২২ থেকে ২৫ টাকা, ঝিঙা ৩০ থেকে ৩২ টাকা, করলা ২২ থেকে ২৪ টাকা, কাঁকরোল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ২০ থেকে ২২ টাকা, শসা ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, কচুর ছড়া ৩০ টাকা, কচুর লতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। প্রতি পিস বাঁধাকপি ১২ থেকে ১৫ টাকা, ফুলকপি ১০ থেকে ১২ টাকা, কলা ১০ থেকে ১৫ টাকা হালি, লাউ প্রতি পিস ২৫ থেকে ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ২০ থেকে ২৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে, পাইকারি এ বাজার থেকে খিলগাঁও, মালিবাগ, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা বাজারে দামের ব্যবধান পণ্যভেদে দুই থেকে তিনগুণ। সেখানে প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা, কচুর ছড়া ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। আর প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কলা ২৫ থেকে ৪০ টাকা হালি, লাউ প্রতি পিস ৪৫ থেকে ৭০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে প্রতিকেজি টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা পাইকারি বাজারের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেশি।  

এছাড়া, বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের শাক। পাইকারি প্রতি আঁটি লাল শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কুমড়ার শাক ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

বাজার ভেদে বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি। আর ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে পণ্যের অভাব না থাকলেও বিক্রেতারাই কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছেন।

শাহিন সুমন নামে শান্তিনগর বাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের অভাব নেই, তবু বাড়তি দাম। এর পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে। বাজার মনিটরিং করা হলে অবশ্যই সব পণ্যের দাম কমে আসতো।

খুচরা বাজারে কমছে না পণ্যের দাম।  ছবি: বাংলানিউজ

মজিবর রহমান নামে খিলগাঁও বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি বাজারে মালের সরবরাহ কমায় সেখানকার বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে, এ প্রতিবেদক তাকে পাইকারি বাজারের দামের তালিকা বললে মুহূর্তেই পাল্টে যায় সুর।

তিনি বলেন, আসলে পাইকারি বাজার থেকে মাল আনতে দুই জায়গায় বাড়তি টাকা দিতে হয়, গাড়ি ভাড়া বেশি, দোকান ভাড়া-কর্মচারীর খরচ আছে। এজন্য কিছুটা বাড়তি দাম রাখা হয়, তবে খুব বেশি না।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী রফিক বাংলানিউজকে বলেন, সবজি পচনশীল হওয়ায় দাম প্রতিদিনই কমবেশি হয়। আজ দাম কম, কাল বেশি হতে পারে। তবে, খুচরা বাজারে দাম বাড়লে তারা আর কমাতে চান না।

এদিকে, পেঁয়াজের দাম দুই-তিনদিন আগে কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমলেও আবার ফিরে গেছে আগের দামেই। বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, দেশি রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৮০ টাকা, আদা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে, অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের বাজার। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ থেকে ৭৮০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম প্রতি হালি ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, ব্রয়লার ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।  

গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল ও ডিম।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯
ইএআর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।