প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভাও হয়েছে। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের পালা।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, ২০১৭ সালে প্রকল্পটি নেওয়ার সময় মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ১ ডলার সমান ৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। সে অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি কেনার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অংশে মোট ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৪৪৯ কোটি ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বেড়ে ১ ডলার সমান হয়েছে ৮৫ টাকা। ফলে যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা খাতে প্রয়োজন মোট ৪৮৬ কোটি ২৩ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে অর্থাৎ ৩৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা বাড়তি প্রয়োজন হবে।
ইতোমধ্যে বৈদেশিক যন্ত্রপাতির সিডিভ্যাট খাতে গড় হার ১০ শতাংশ দেখানো হলেও ২৫০ কোটি ১৮ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা প্রয়োজন হয়েছে। অর্থাৎ ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যয় হয়ে গেছে।
অন্যদিকে নতুন করে চলতি অর্থবছরে আরও ২৩৬ কোটি টাকার পণ্য আমদানির জন্য প্রায় ৬৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা অর্থাৎ ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ সিডি ভ্যাট বাবদ ব্যয় করতে হবে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ৬৭৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় ৭৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক রেজাউল কবির বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটি নেওয়ার সময় ডলারের দাম কম ছিল, বর্তমানে অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে সিডি ভ্যাট বাবদও ব্যয় বেড়েছে। সব মিলিয়ে ৩ জি প্রযুক্তি চালুকরণ এবং ২.৫জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। নতুন করে প্রকল্পের আওতায় আরও টাকা লাগবে। এই বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব গেছে। প্রকল্পটি নিয়ে পিইসি সভাও হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পে সারা দেশকে থ্রিজির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি টেলিকের পক্ষে। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ে এই প্রকল্প। এখন উপজেলা পর্যায়ে থ্রিজি এবং গ্রাম পর্যায়ে টুজি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি চালু করা হবে। আর দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শহরে থ্রিজি নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা হবে। বর্তমানে মাত্র সোয়া ১৭ লাখ গ্রাহক থ্রিজি সুবিধা পাচ্ছে। প্রকল্পটি চীন সরকারের ঋণ সহায়তায় করার কথা ছিল। কিন্তু তাদের কাছ থেকে ঋণ পাওয়া যায়নি। তাই সরকার টেলিটককে ঋণ হিসেবে এই অর্থ প্রদান করছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় গ্রামেও থ্রিজি পৌঁছে যাবে। যেখানে ইতোমধ্যেই টেলিটকের ৩জি চালু করা হয়েছে, সেসব স্থানে এইচএসপিএ প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করে ক্যাপাসিটি বাড়ানো হবে। টেলিটকের গ্রাহক বাড়ানোর লক্ষ্যে আরও ১৭ লাখ সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থাসহ উচ্চগতির ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে। অধিক সংখ্যক ৩ জি ও ২.৫জি সংযোগের মাধ্যমে দেশে টেলিডেনসিটি বৃদ্ধি, ই-গর্ভনেন্স, ই-শিক্ষা কার্যক্রম ও ই-হেলথ সুবিধা বাড়ানো হবে।
প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ২ হাজার ১শ’ সাইটে মোট ২ হাজার ১শ’ নতুন বিটিএস ও ১ হাজার ৫৬২টি নোড বি বসানো হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। মেয়াদের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন না হওয়ায় এটি বাস্তবায়নে সময় বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯
এমআইএস/এইচএডি/