ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প

পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোনে ব্যাগ কারখানা করবে বসুন্ধরা 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোনে ব্যাগ কারখানা করবে বসুন্ধরা  চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ অন্যরা। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বাগেরহাট জেলার মোংলায় অবস্থিত শিকদার গ্রুপের পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোনে ব্যাগ উৎপাদন কারখানা স্থাপন করবে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেড (বিআইসিএল)।

রোববার (২৮ জুন)  রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে শিকদার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন (প্রাইভেট) লিমিটেড এবং বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের (বিআইসিএল) ভূমি ইজারা চুক্তি সই হয়েছে।

নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিপত্রে সই করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এবং পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন (প্রাইভেট) লিমিটেডের গ্রুপ ডিরেক্টর জন হক শিকদার।

 

এ সময় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী এবং উভয় গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, করোনা সংকটকালে এখানে আসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। কাজ তো থেমে থাকবে না। কাজ চালিয়ে যেতে হবে। প্রাইভেট ইকোনমিক জোন মোংলায় আমরা ১৬ একর জায়গা নিয়েছি। সেখানে আমরা ব্যাগ উৎপাদন কারখানা করবো। এছাড়া আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে ওয়েল ডিপো করার জন্য। চুক্তিপত্রে সই করছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর ও পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন (প্রাইভেট) লিমিটেডের গ্রুপ ডিরেক্টর জন হক শিকদার। তিনি বলেন, বেজার চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী সবসময় আমাদের সহযোগিতা করেন। আমাদের কয়েকটি ও অর্থনৈতিক অঞ্চল আছে। একটি কেরানীগঞ্জে আরেকটি চট্টগ্রামে। আরো বেশ কয়েকটি ইকোনমিক জোনের চেষ্টা করছি আমরা। আমরা সব জায়গায় ব্যবসার উন্নয়ন করবো। ভালোভাবে যেন ব্যবসা করতে পারি এজন্য সবাই দোয়া করবেন।
 
পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন লিমিটেডের গ্রুপ ডিরেক্টর জন হক শিকদার বলেন, ব্যাগ উৎপাদন কারখানা স্থাপনের জন্য মোংলায় পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোনে ১৬ একর জমি নিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সেই লক্ষ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি সই করা হলো। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য বেজার চেয়ারম্যানকে বিশেষ ধন্যবাদ।  

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিআইসিএল তাদের নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য ব্যাগ উৎপাদন কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে এ চুক্তির আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে ১৬ একর জমি নিচ্ছে। এ কারখানা কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করবে।

পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন (প্রাইভেট) লিমিটেড দেশের প্রথম কোম্পানি যাকে ডিজাইন, বিল্ড, ফাইন্যান্স, ওয়োন, অপারেট ও ট্রান্সফার (নকশা, নির্মাণ, অর্থায়ন, মালিকানা গ্রহণ, পরিচালনা ও হস্তান্তর) ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ৫০ বছরের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। বেজার সহায়তায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মডেলে ২০৫ একর জমিতে অর্থনৈতিক মোংলা অঞ্চল স্থাপন করা হয়েছে।  

কৌশলগত অবস্থানের কারণে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল বাংলাদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরের মোংলা এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। প্রস্তাবিত খান জাহান আলী বিমানবন্দর হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে।

পদ্মাসেতুর কাজ সম্পন্ন হলেও সড়ক ও রেলের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগ বিবেচনায় সবচেয়ে সহজ হবে যোগাযোগ সময়ের বিবেচনায় সবচেয়ে সহজ হবে। যোগাযোগের সুবিধা মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মোংলাবন্দরের চাহিদা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বসুন্ধরা গ্রুপ তার প্রথম প্রতিষ্ঠিত ইস্ট ওয়েস্ট প্রপাটি ডেভেলপমেন্ট (প্রা:) লিমিটেডের অধীনে ১৯৮৭ সালে বসুন্ধরা হিসাবে পরিচিত রিয়েল এস্টেট কার্যক্রম শুরু করে। বসুন্ধরা ইতোমধ্যে দেশের বৃহত্তম শিল্প গ্রুপ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং বিভিন্ন খাতের ব্যবসায় নেতৃত্বের স্থানে আসীন হয়েছে।  

বক্তব্য রাখছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।  ছবি: ডিএইচ বাদলমোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এখন এখানে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এ অঞ্চলটি কাস্টমস বন্ডেড এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এখানে আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।  

মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণাধীন অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে প্রবেশ প্লাজা, উপাসনালয়, বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিমা কোম্পানি, প্রশাসন ভবন, অগ্নিনির্বাপণ কেন্দ্র, গেস্ট হাউস, বিনিয়োগকারীদের ক্লাব, সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট, ডরমিটরি, দোকানপাট, ওয়্যারহাউজ, কাস্টমস, কেন্দ্রীয় বজ্য শোধনাগার এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ।  অর্থনৈতিক অঞ্চলটিকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এখানকার মোট ভূমির ৩০ শতাংশ সবুজ বা উন্মুক্ত স্থান হিসেবে রাখা হয়েছে।  

বসুন্ধরা গ্রুপসহ বহু সংখ্যক স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারী অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের শিল্প কারখানা স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে।

কৌশলগত অবস্থান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বিবেচনায় এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে পাওয়ার প্যাক ইকোনমিক জোন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
এসই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।