ঢাকা: পুঁজিবাজারের গতিশীলতা ধরে রাখতে হলে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. রকিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও গতিশীল পুঁজিবাজার দেখতে চাই, যে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে ভালো শিল্পোদ্যোক্তারা বাজার থেকে টাকা তুলবে এবং তা শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ, আবাসন, নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজে ব্যবহার করবেন।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক লেখায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্যাংক ব্যবস্থাপনার ওপর বাড়তি কোনো চাপ থাকবে না দীর্ঘমেয়াদী শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য। বর্তমান বাজারের গতিপ্রকৃতি দেখে আমরা বলতে পারি পুঁজিবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে এসেছে। যাদের হাতে টাকা আছে তারা সবাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু করেছে। তারই প্রতিফলন আমরা এক্সচেঞ্জের টার্নওভারে দেখতে পাচ্ছি। আমরা আগামী তিন বছরের মধ্যে ডেইলি টার্নওভার ৫০০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। শুধু ইক্যুইটি মার্কেটের ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন নতুন নতুন প্রডাক্ট বাজারে নিয়ে আসার জন্য বিএসইসি এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
রকিবুর রহমান বলেন, সরকারি কোম্পানির ভালো ভালো শেয়ার বাজারে এনে বাজারের গভীরতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। দেশীয় ভালো ভালো প্রাইভেট কোম্পানির শেয়ার এবং মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির শেয়ার বাজারে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সফল, সৎ ও দক্ষ উদ্যোক্তাদের পুঁজিবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করে নিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আগ্রহ বাড়ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে জিডিপিতে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের অবদান ৫০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বিএসইসি এবং এক্সচেঞ্জ এগিয়ে যাচ্ছে। বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসছে। কোনো অবস্থাতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, বিএসইসি যত কঠোর অবস্থানে থাকবে তত বেশি বাজার ভালো থাকবে। বিএসইসি কোনো অবস্থাতে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করবে না, ইনডেক্সকে নিয়ন্ত্রণ করবে না। শেয়ারের দাম ওঠানামা করলে ইনডেক্স বাড়ে এবং কমে। সেটাই স্বাভাবিক। বাজারকে এগিয়ে নিতে হলে লিস্টেড কোম্পানিগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা বিশেষ জরুরি। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ২৪ শতাংশ হোল্ড করে এবং সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এই সফল প্রতিষ্ঠানের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার অনেক বেশি। বিনিয়োগকারীদের হাতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার আছে। বাজারের গতিশীলতা ধরে রাখতে হলে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ব্যাংকে যারা স্পন্সর/ডিরেক্টর আছেন তাদের বুঝতে হবে। তারা ব্যাংকের মালিক নন, তারা শেয়ারহোল্ডার। পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ থেকে এই সব স্পন্সর/ডিরেক্টরদের বেরিয়ে আসতে হবে।
ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে বিএসইসিকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন রকিবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
এসএমএকে/এমজেএফ