ঢাকা: দেশজুড়ে চলছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-৯। যাতে ‘ঘণ্টায় ঘণ্টায় ফ্রিজ ফ্রি’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে বাংলাদেশি সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটন।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়ালটন থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, কাস্টমার ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে বিক্রয়োত্তর সেবা অনলাইন অটোমেশনের আওতায় আনতে ওই ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে ওয়ালটন। এ পদ্ধতিতে ক্রেতার নাম, মোবাইল নম্বর এবং বিক্রি করা পণ্যের মডেল ও বারকোডসহ বিস্তারিত তথ্য ওয়ালটনের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ফলে, ওয়ারেন্টি কার্ড হারিয়ে গেলেও দেশের যেকোনো ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টার থেকে দ্রুত সেবা পাচ্ছেন গ্রাহক। সার্ভিস সেন্টারের প্রতিনিধিরাও গ্রাহকের ফিডব্যাক জানতে পারছেন। এ কার্যক্রমে ক্রেতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে ফ্রিজ এবং ওয়াশিং মেশিনে ফ্রি ফ্রিজের সুবিধা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। রয়েছে কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার।
এদিকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে নিজস্ব ব্র্যান্ডের পণ্য বাজারজাতের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী গ্লোবাল মডেলের ফ্রিজ, টিভি, এসি ইত্যাদি তৈরি করে দিচ্ছে ওয়ালটন। যা ওইএমের (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স) আওতায় রপ্তানি করা হচ্ছে। ফলে, করোনা পরিস্থিতিতেও ইউরোপের জার্মানি, পোল্যান্ড, গ্রিসসহ তুরস্কের মতো উন্নত দেশগুলোতে ওয়ালটন পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেলযুক্ত ওয়ালটনের তৈরি ফ্রিজ ভারতে রপ্তানি হচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনা দুর্যোগ কাটিয়ে ভারতে ওইএম ফ্রিজের প্রথম শিপমেন্ট পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
গত রোববার (৩১ জানুয়ারি) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হেডকোয়ার্টারে ভারতে ফ্রিজ রপ্তানির শিপমেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এসএম নূরুল আলম রেজভী।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার, চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ই এম ইয়াং, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের (আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম, নির্বাহী পরিচালক ও ওয়ালটন ফ্রিজের চিফ অপারেটিং অফিসার ইউসুফ আলী, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর আব্দুর রউফ, ফার্স্ট সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর নাজমুল হোসাইন ইভান প্রমুখ।
ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ফ্রি ফ্রিজ পাওয়া দুই শতাধিক ক্রেতার একজন ঢাকার বংশালের সুমন হোসেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মরত সুমন জানান, তিনি গত ১৭ জানুয়ারি আগা সাদেক রোডের ইমরান ইলেকট্রনিক্স থেকে ৩২৮ লিটারের একটি ওয়ালটন ফ্রিজ কিনেছিলেন। এরপর ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করলে আরেকটি ফ্রিজ ফ্রি পাওয়ার মেসেজ যায় তার মোবাইলে।
ফ্রিজ কিনে আরেকটি ফ্রি পাওয়ার সংবাদে মহাখুশি সুমনের ৮ সদস্যের পরিবার। নতুন ফ্রিজটিও বাসায় ব্যবহার করবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের তাজবাহ উদ্দিন সৈকত ওয়ালটনের একটি ফ্রিজ কিনে আরেকটি ফ্রি পেয়েছেন।
মাছ ব্যবসায়ী সৈকত বলেন, ওয়ালটন ফ্রিজ দামে সাশ্রয়ী, মানেও বিদেশি কোম্পানির তুলনায় ভালো। ওয়ালটন ফ্রিজের ডিজাইন আকর্ষণীয়। তাই ওয়ালটন থেকেই ফ্রিজটি কিনেছি। কেনার পর আরেকটি ফ্রিজ সম্পূর্ণ ফ্রি পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। বন্ধুরা আমার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে বিষয়টি সবাইকে জানালে অসংখ্য মানুষের অভিনন্দন পেয়েছি। সবাই আমাকে ভাগ্যবান বলছে। বিষয়টিতে আমি বেশ আনন্দিত। ক্রেতাদের জন্য এমন সুবিধা রাখায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।
ওয়ালটন ফ্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, চলতি বছর ফ্রিজের ডিজাইন, কালার, মডেল ও ফিচারে বৈচিত্র্য আনার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন ফ্রিজে সংযোজন করা হচ্ছে স্মার্ট ফিচার। ডিজাইনেও থাকছে বৈচিত্র্যতা। এরইমধ্যে বাজারে ছাড়া হয়েছে সাইড বাই সাইড ডোরের বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের কয়েকটি নতুন মডেল। এ বছর অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ সাইড বাই সাইড ডোরের স্মার্ট ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হবে। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই এই মডেলের ফ্রিজ উৎপাদন করছে।
স্থানীয় বাজারে ওয়ালটনের রয়েছে দেড় শতাধিক মডেলের ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, ডিপ ফ্রিজ ও বেভারেজ কুলার। দাম মাত্র ১০ হাজার ৯শ ৯০ টাকা থেকে ৮০ হাজার ৯শ টাকার মধ্যে। আরও রয়েছে চোখ ধাঁধানো আকর্ষণীয় ডিজাইনের গ্লাস ডোর এবং ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির বিএসটিআইর ‘ফাইভ স্টার’ এনার্জি রেটিংপ্রাপ্ত ডিজিটাল ডিসপ্লেসমৃদ্ধ সাশ্রয়ী মূল্যের ফ্রিজ। এসব ফ্রিজ স্ট্যাবিলাইজার ছাড়াই নিশ্চিন্তে চলে। এছাড়া ইনভার্টার প্রযুক্তির ৫৬৩ লিটারের সাইড বাই সাইড গ্লাস ডোরের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর সব শ্রেণির গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি ওয়ালটন বাজারে ছেড়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে সমৃদ্ধ ‘সিক্সএনাইন’ সিরিজের ৬১৯ লিটারের ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজ। অত্যাধুনিক সব ফিচারসমৃদ্ধ ওই ফ্রিজ ইতোমধ্যেই অভিজাত ক্রেতাদের কাছে বিশেষ আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
ফ্রিজের প্রকৌশলীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারী সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে ওয়ালটনের প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হচ্ছে। ওয়ালটন ফ্রিজের রয়েছে বিএসটিআইয়ের ফাইভ স্টার এনার্জি এফিশিয়েন্সি রেটিং। ফ্রিজ উৎপাদন ও রপ্তানিতে ওয়ালটন অর্জন করেছে আইএসও, ওএইচএসএএস, ইএমসি, সিবি, আরওএইচএস, এসএএসও, ইএসএমএ, ইসিএইচএ, জি-মার্ক, ই-মার্ক ইত্যাদি সার্টিফিকেট। আন্তর্জাতিক মানের ওয়ালটন ফ্রিজ রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্টের পাশাপাশি কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি দিচ্ছে ওয়ালটন।
বর্তমানে বাজারে রয়েছে ১৪ মডেলের সেমি অটোমেটিক এবং অটোমেটিক টপ ও ফ্রন্ট লোডিং ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিন। ৬ থেকে ১২ দশমিক ৫ কেজি পর্যন্ত ধারণক্ষমতার এসব ওয়াশিং মেশিনের মূল্য মাত্র ৬ হাজার ৯শ টাকা থেকে ৪৮ হাজার টাকার মধ্যে। নগদ মূল্যের পাশাপাশি জিরো ইন্টারেস্টে ইএমআই এবং ৯৯৯ টাকা ডাউনপেমেন্টে কিস্তি সুবিধায় কেনার সুযোগ আছে। ওয়ালটন ওয়াশিং মেশিনে গ্রাহকরা পাচ্ছেন ফ্রি ইন্সটলমেন্ট সুবিধা। দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে সারা দেশে ওয়ালটনের রয়েছে ৭৬টি সার্ভিস সেন্টার।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২১
এএটি