ঢাকা: সারা বিশ্বেই পর্যটকদের কাছে কায়াকিং বেশ জনপ্রিয়। সেই জনপ্রিয় বিষয়টির অভিজ্ঞতা দেশের পর্যটকেরাই নিতে পারবেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে।
কক্স কায়াকিং এর উদ্যোক্তারা জানান, গত ২৮ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো কায়াকিং করার সেবা দেওয়া শুরু করেন তারা। তবে এখনও এটি পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা সরকার এম সজীব বাংলানিউজকে বলেন, কায়াকিং বিশ্বের অনেক দেশেই পর্যটক এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমিদের কাছে জনপ্রিয়। কক্সবাজারে এটি আমরাই প্রথম নিয়ে আসলাম। এরজন্য আমাদের কক্সবাজার জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় প্রশাসনের অন্য অঙ্গগুলো থেকেও দারুণ সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি পর্যটকেরা এখানে এলে রীজুখালে বয়ে যাওয়া টলমলে সাগর জলে কায়াকিং বেশ উপভোগ করবেন। এর একপাশে আছে সাগর এবং আরেক দিকে পাহাড়ের সৌন্দর্য। তার মাঝে দিয়ে সাগরের প্রবাহিত পানিতে সৃষ্ট খাল। পর্যটক এবং প্রকৃতিপ্রেমিদের কাছে আদর্শ একটি স্থান হতে পারে এটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফগামী মেরিন ড্রাইভের রীজুখাল ব্রিজের উত্তর পাশে এই কায়াকিং এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ব্রিজটির ঠিক কক্সবাজার প্রান্তেই আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) চেকপোস্ট।
পর্যটকদের জন্য কায়াকিং এ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান কক্স কায়াকিং এর আরেক উদ্যোক্তা আনোয়ার আজিম তুহিন। তুহিন বলেন, আমরা তিনটি বোট নিয়ে শুরু করেছি। সবগুলোই থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ। কায়াকিং করা প্রতিজনের জন্য থাকছে লাইফ জ্যাকেট। কেউ যদি কায়াকিং করতে নাও পারেন অথবা দ্বিধা অনুভব করেন তাদের জন্য আমাদের একজন দক্ষ সহযোগী তার সঙ্গে থাকেন। ফলে যিনি আগে কখনও কায়াকিং করেননি তিনিও এর অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এটি শুরু করলে সার্বক্ষণিক একজন লাইফ গার্ডও রাখব। কাজেই পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণ নিরাপদ।
যাত্রা শুরুর পর থেকে পর্যটকদের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান কক্স কায়াকিং এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সাজ্জাদুর রহমান বাতেন। তিনি বলেন, শুরু থেকে আমরা প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। প্রথম দিন আমাদের পরিচিত মহল থেকে অনেকেই এসেছেন এবং কায়াকিং করে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এরপরের দুই দিনে অন্তত ৩০ জন পর্যটক আমাদের সেবা নিয়েছেন। কক্সবাজার শহরের বেশ কয়েকটি তারকা হোটেল থেকে আমরা অফার পেয়েছি তাদের সঙ্গে কায়াকিং এর পার্টনারশিপ করার। আমাদের এখন যে আয় হচ্ছে সেটি আমরা স্থানীয় একটি এতিমখানায় অনুদান হিসেবে দিচ্ছি। কোনো লাভ নিচ্ছি না। পুরোপুরি চালু হলে তখন আমরা এটিকে রেভিনিউ মডেলে নিয়ে আসব।
এদিকে কায়াকিং এর অভিজ্ঞতা বেশ রোমাঞ্চকর বলে জানাচ্ছেন এখানে আসা পর্যটকেরা। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফজলুর রহমান রনি বাংলানিউজকে বলেন, কক্সবাজার থেকে ইনানি যাচ্ছিলাম। ব্রিজের উপর থেকে দেখলাম কায়াকিং করানো হচ্ছে। তাই আর লোভ সামলাতে না পেরে ফেরার পথে এখানে এসেছি। কায়াকিং করেছি। এর আগেও আমি ভিয়েতনামে কায়াকিং করেছি। এখানকার অভিজ্ঞতাও বেশ ভালো। কায়াকিং বেশ রোমাঞ্চকর একটা বিষয়। আশা রাখছি কক্সবাজারের পর্যটন খাতের বিকাশে এটিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পুরোদমে চালু হলে কায়াকিং করতে আসা পর্যটকদের জন্য একটি বিশ্রামাগার এবং রেস্টুরেন্ট চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান কক্স কায়াকিং এর উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২১
এসএইচএস/আরএ