ঢাকা: স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম। একইসঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ার সঙ্গে দেশে নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানান তিনি।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ সংক্রান্ত ‘ইফেক্টিভ পার্টনারশিপ উইথ দ্য প্রাইভেট সেক্টর ফর সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন’ বিষয়ক এক অনলাইন কর্মশালায় গেস্ট অব অনার হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ‘সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রজেক্ট (এসএসজিপি) এর উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন এ অর্জনকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ, মর্যাদাময় ও বর্ণিল করে তুলেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে একটি সুখী, সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সেটি আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অনন্য গর্বের প্রাপ্তি হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ। গ্র্যাজুয়েশনের জন্য দেশ হিসেবে আমাদের মর্যাদা বেড়েছে এবং বিশ্বের কাছে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে যা বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এতে মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সুবিধা পাওয়া যাবে, দেশে বিনিয়োগে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের ফলে স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রদত্ত ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট ম্যাজারস যেমন, ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি মার্কেট এক্সেস, প্রিফারেনশিয়াল ট্রিটমেন্টস, ট্রিপস ইত্যাদি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।
এফবিসিসিআই কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাইভেট সেক্টরের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের জন্য এফবিসিসিআই ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্ট্রাটেজিক পার্টনারদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিয়ে ট্রেড সাপোর্ট ইনস্টিটিউশনের উপর গুরুত্বারোপ, এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস, প্রোডাক্ট অ্যান্ড মার্কেট ডাইভারসিফিকেশন, নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার, ইকনোমিক ডাইভারসিফিকেশন, এক্সপোর্ট স্ট্রাটেজিক ডেভেলপমেন্ট, উইমেন ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট, আপগ্রেডিং ভ্যালু চেইন, প্রমোটিং ডিজিটাল ইকোনমি অ্যান্ড ই-কমার্স, রিজিউনাল ট্রেড, ট্রেনিং অন কমার্সিয়াল ডিপ্লোম্যাসি, ট্রেড অ্যান্ড মার্কেট ইন্টেলিজেন্স, প্রমোটিং পাবলিক-প্রাইভেট ডায়ালগ অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডভোকেসি, আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইমপ্যাক্ট অব এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য ট্রেড ফেসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট, সাপোর্টিং ইনোভেশন, স্টার্টআপস অ্যান্ড ইকোসিস্টেম এবং সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথের উপর প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড নলেজের সঙ্গে ইন্ডিজিনিয়াস ইনপুট সমন্বয় করে আমাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এবং সকল চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনকে এতে সম্পৃক্ত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চেয়ারপার্সন জুয়েনা আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব টিপু মুনশি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বক্তব্য রাখেন।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ার ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২১
জিসিজি/জেআইএম