ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডেল্টা লাইফের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
ডেল্টা লাইফের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা

ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর।  

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।

নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক সায়মা পারভীনের নেতৃত্বে একটি দল বিমা কোম্পানিটির ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত করে। ভ্যাট গোয়েন্দার দল তদন্তের স্বার্থে দলিলাদি দাখিলের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে তলব করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান দাখিল করা বার্ষিক সিএ রিপোর্ট, প্রতিবেদন, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান জমা করা ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্য দলিলাদি থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত আড়াআড়ি যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

এই প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্যবিমার উপর ৪০ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৪১১ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রির তথ্য গোপন করেছে। এতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৯ কোটি ৮০ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৯ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ১১ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৮ টাকা সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।

তদন্ত অনুসারে নিরীক্ষা মেয়াদে সিএ ফার্মের রিপোর্ট মোতাবেক উৎসে কর ৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৮০৩ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার ২৪৯ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৫ হাজার ৪৪৬ টাকার ফাঁকি উদঘাটিত হয়। উৎসে কর কর্তনের উপর প্রযোজ্য এই ফাঁকি দেওয়া ভ্যাটের উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৯ টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য হবে।

অন্যদিকে, তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৮০ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ ৫৫ হাজার ১০১ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপরও ভ্যাট আইন অনুসারে মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ২ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮১ টাকা সুদ প্রযোজ্য হবে।

এই তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ১৬ কোটি ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৯০৫ টাকা এবং সুদ বাবদ ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৮২৮ টাকাসহ ৩৫ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭৩৩ টাকা পরিহারের তথ্য উদঘাটিত হয়েছে।

মইনুল খান জানান, প্রতিষ্ঠানটি সরকারের ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে নানা ধরনের জালিয়াতি ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, যা ভ্যাট আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আজ এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে উদঘাটিত পরিহার করা ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
এসএমএকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।