ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মাসের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
মাসের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ

ফেনী: ফেনীতে মুরগির দাম বাড়ছে দ্রুতগতিতে। মাত্র একমাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ৷ সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে প্রায় শতভাগ।

ক্রেতারা বলছেন, এমন ঊর্ধ্বগতি অস্বাভাবিক এবং সাধারণ মানুষের খাদ্যাভ্যাসে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন পরিস্থিতি।

কারণ অনুসন্ধানে দেখা যায়, করোনায় খামার মালিকদের আর্থিক ক্ষতি, মূলধনের সংকট, উদ্যোক্তা কমে যাওয়া, মুরগির বাচ্চার দাম বৃদ্ধি এবং খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বেড়ে গেছে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ী এবং খামার মালিকরা।

সদর উপজেলার ধলিয়ায় উদ্যোক্তা মোশারফ হোসেন জানান, রোগজনিত কারণে খামারে প্রচুর সংখ্যক মুরগি মরেছে। এছাড়া ছোট খামারিরা বাকিতে মুরগির খাদ্য কিনে থাকে। কিন্তু ব্যবসা মন্দার কারণে খাদ্য ব্যবসায়ীরা আগের মত বাকি দিতে পারছেন না। ফলে উৎপাদন কমেছে। ফেনী সুলতান মাহমুদ পৌর হকার্স মার্কেটে ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজি প্রতি ২৯০ থেকে ৩শ টাকা। মুরগি বিক্রেতা জানান, ফেব্রুয়ারি শুরুতে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ৯০ থেকে ১শম টাকা সোনালি মুরগির দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।
ফেনী শহরে একটি বিপণন প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি শেখর দুলাল বলেন, বাজারে কম দামের মধ্যে মুরগিই ভরসা। এক মাসের মধ্যে দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের জন্য নিয়মিত মাংস কেনা সম্ভব হচ্ছে না।

সোনালি মুরগির দাম অতিরিক্ত বাড়ায় আরও একটি কারণ হিসেবে খুচরা বিক্রেতারা জানান, করোনায় বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। জানুয়ারি থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান খুব বেশি বেড়ে যাওয়ায় সোনালি মুরগির চাহিদাও খুব বেড়ে গেছে। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী যোগান নেই ফলে দামও বেড়েছে দ্রুতগতিতে।

ফেনীতে ৯৮২টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে বলে ইতোপূর্বে জানায় জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। জেলায় সব ধরনের মাংসের চাহিদা ৬৫ হাজার টন এবং উৎপাদন হয় ৫৮ হাজার টন। বাকিটুকু অন্য জেলা থেকে আসে। তবে, পোল্ট্রি মাংসের চাহিদা আলাদা করে হিসেব না হলেও একই সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি রয়েছে।

মুরগির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি প্রসঙ্গে একাধিক কারণ বলছেন ফেনী জেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল আলম।

তিনি জানান, বাচ্চা উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে দ্রুতহারে। খামারি একমাসের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাচ্চা কিনছে দ্বিগুণের বেশি দামে। বস্তা প্রতি খাদ্যের দাম বেড়েছে দেড়শ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই বিক্রিযোগ্য মুরগির দাম বাড়ছে একই হারে।

তিনি জানান, করোনায় ছোট বড় খামারিরা আর্থিক সংকটে পুঁজি নষ্ট করেছে। নতুন করে অনেক খামারে বাচ্চা তোলেনি। এতে করে বাজার চাহিদা না থাকায় বাচ্চা উৎপাদন কমে গেছে। কিন্তু শীত কমার সঙ্গে সঙ্গে খামারিরাও বাচ্চা তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় যোগান সম্ভব হচ্ছে না। এতে দামও বেড়ে চলেছে। এছাড়া বার্ড ফ্লু, অজ্ঞাত রোগে মুরগিতে মড়ক লেগে সংকট দেখা দিয়েছে।

বাজারে কিছুটা সংকট থাকলেও দ্রুত পরিস্থিতি উত্তরণের আশ্বাস দিচ্ছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান।  

তিনি বলেন, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার কারণে ছোট খামারিরা ব্যবসা সাময়িক বন্ধ রাখেন তাই এখন দাম ঊর্ধ্বগতি। তবে এ চিত্র সাময়িক। খামারিরা শীত কমার সঙ্গে সঙ্গেই বাচ্চা তুলেছে। রমজানের মধ্যেই দাম সহনীয় হবে। মুরগির রোগজনিত বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো খামারি আমাদের কাছে এমন অভিযোগ করেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।