ঢাকা: মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ব্যবসায়িক যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। ইউরোপের সঙ্গে বন্দর ও বিপণন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেও দুবাই বেশ জনপ্রিয়।
মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুবাই সফরকালে এ কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন। কাউন্সিলের কো-চেয়ারম্যান হিসেবে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন এফবিসিসিআই ও ফেডারেশন অব ইউএই চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দুই সভাপতি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে দেশের খাত ভিত্তিক বিনিয়োগ ও রপ্তানি সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরা হবে।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ফেডারেশন অব ইউএই চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার রপ্তানিবাজার ধরা সহজ হবে। ইউরোপের সঙ্গেও ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়বে।
এফবিসিসিআইর এ উদ্যোগ এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জন্য নতুন বাজার উন্মোচনের সুযোগ তৈরি করবে বলে মনে করেন তিনি।
যৌথ বিজনেস কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে দেওয়া উপস্থাপনায় বিনিয়োগের জন্য ৫টি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফসিসিআই) সভাপতি নাসের ইজাজ বিজয়। খাতগুলো হলো কৃষি ও হালাল খাদ্যপণ্য, হালকা প্রকৌশল বিশেষ করে গাড়ির যন্ত্রাংশ, ব্যাংক ও বিমা, পেট্রোকেমিক্যাল ও বন্দর ব্যবস্থাপনা।
এছাড়া আইসিটি, আইটিইএস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, প্রাইভেট ইক্যুইটি, অ্যাভিয়েশন, শিপিং ও ভ্যালু অ্যাডেড অ্যাগ্রো সার্ভিসখাতে ইউএইর বিনিয়োগ আকর্ষণ করার কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উইংয়ের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসীর মামুন।
অন্যদিকে এফবিসিসিআইর পরিচালক আবুল কাশেম খান পর্যটন সেবা খাতে ও বেসরকারি বন্দর খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দুবাইতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বৈঠকে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ও এফবিসিসিআইর প্যানেল উপদেষ্টা ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক অংশীদার খুঁজছে। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে তারা। বাংলাদেশেরও দেশটির সঙ্গে এফটিএ করা উচিত।
চ্যালেন আইর বার্তাপ্রধান ও এফবিসিসিআইর প্যানেল উপদেষ্টা শাইখ সিরাজ জানান, ইউএইতে বাংলাদেশি সবজি ও বীজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে নার্সারি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে দু’দেশের যৌথ উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। দক্ষ মানবসম্পদ ও খাদ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও দু’দেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এফবিসিসিআইর আরেক প্যানেল উপদেষ্টা ও বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. কাজী ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে যৌথ বিজনেস কাউন্সিলকে কাজে লাগাতে হবে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের পটভূমি পরিবর্তন হয়েছে। শুধু তৈরি পোশাক ও প্রবাসী আয়ের ওপর এখন আর বাংলাদেশের উন্নয়ন নির্ভরশীল নয়। এদেশে ইলেকট্রনিকস, প্লাস্টিকসহ অসংখ্য খাতে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক উদ্যোক্তাদের এসব বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে বাংলাদেশকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার ব্যাপারে জোর দেন তিনি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের এসএমই পণ্যের বাজার ধরতে একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরির প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআইর আরেক প্যানেল উপদেষ্টা ড. মোস্তফা আবিদ খান।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি মো. হাবীব উল্লাহ ডন, এম.এ. রাজ্জাক খান রাজ, পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবীর ও ড. নাদিয়া বিনতে আমীন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান, বিপিজিএমইএ সভাপতি শামীম আহমেদ ও মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ২৬ ফেব্রুয়ারি,২০২২
এসই/এমএমজেড