মেহেরপুর: দেশব্যাপী স্বর্ণালঙ্কার কারখানা গড়ে তুলতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
শুক্রবার (১৭ জুন) বিকালে মেহেরপুর বাজুস কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা জানান।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়।
সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর বাজুসের সভাপতি কিশোর পাত্র।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি ল অ্যান্ড মেম্বারশিপের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সদস্য সচিব মো. রিপনুল হাসান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের সদস্য রকিবুল ইসলাম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মেহেরপুর বাজুসের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম।
ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুয়েলারি ব্যবসাকে অপবাদ থেকে মুক্ত করে বৈধ ব্যবসা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এ ব্যবসাকে ৬ মাসের মধ্যে একটি শিল্প বিপ্লবে রূপ দিয়েছেন।
এ ৬ মাসের মধ্যে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছেন তিনি। বাজুসকে একটি শক্তিশালী গতিশীল ও কার্যকরী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন স্বর্ণ আমদানি করছে। প্রসার হচ্ছে স্বর্ণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত জুয়েলারি ব্যবসার। এ দেশেই আন্তর্জাতিক মানের স্বর্ণালংকার তৈরি করা সম্ভব। পরনির্ভরতা কমিয়ে জুয়েলারি ব্যবসাকে এ দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবো আমরা। এ ব্যবসা এখন শুধু শহরকেন্দ্রীক, তাই এ ব্যবসাকে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে হবে।
প্রধান অতিথি ডা. দিলীপ কুমার রায় আরও বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও কারিগর মিলে সারা বাংলাদেশে ৩০-৪০ লাখ মানুষ রয়েছে। এ ৩০-৪০ লাখ মানুষকে আমরা একটা ছাতার নিচে নিয়ে আসব। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বৈধ স্টেকহোলডারদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারের স্বর্ণ পাবে। এ ব্যবস্থা আমাদের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর করেছেন। বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে ছোট ও মাঝারি স্বর্ণালঙ্কার কারখানা গড়ে তোলা হবে। কেউ চুড়ি, কেউ চেইন, কেউ নাক ফুল বানাবেন। এভাবেই আমাদের শিল্প কারখানা দাঁড়িয়ে যাবে।
তিনি বলেন, সৎভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার সুযোগ করে দিতে বাজুসের বর্তমান কমিটির সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের এ শিল্পের লাইসেন্স, সার্টিফিকেট, ব্যাংক লোনসহ সব ধরনের সুযোগ তৈরি করে দেবেন। এ সুযোগ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অলংকার বানিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করবো। এ দেশের সরকার ও দেশের উন্নয়নেও বাজুস অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। অংশ নেবে উন্নয়নের মহাসড়কে।
মেহেরপুর জেলাকে মুক্তিযুদ্ধের পাঠশালা উল্লেখ করে মতবিনিময় সভার বিশেষ অতিথি বাজুসের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক সংগঠন বাজুস। এটিকে আরও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের এক ছাতার তলে আনতে হবে।
মেহেরপুর জেলার সব জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের বাজুসের সদস্য হিসেবে যুক্ত করার জন্য সংগঠনের নেতাদের অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, অজপাড়াগাঁ আর ঢাকার জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সমস্যা একই ধরনের। আর এ সমস্যার সমাধানে বাজুস কাজ করবে। যে কোনো সদস্যের সমস্যা হলে বাজুস তাদের পাশে দাঁড়াবে। এজন্য বাজুসের সদস্যদের আইডি কার্ড ও সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
বাজুস মেহেরপুর জেলা শাখার সম্পাদক শেখ মোমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা বাজুসের সভাপতি টোটেন জোয়ার্দ্দার, মাগুরা জেলা বাজুসের আহ্বায়ক তাপস দত্ত, যশোর জেলা বাজুসের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন মিঠু, গাংনী উপজেলা বাজুসের সভাপতি সুশান্ত কুমার পাত্র প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
আরএ/জেডএ