ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজধানীতে জমেনি ঈদবাজার, দুশ্চিন্তায় বিক্রেতারা

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২২
রাজধানীতে জমেনি ঈদবাজার, দুশ্চিন্তায় বিক্রেতারা

ঢাকা: কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা। সে উপলক্ষে এখনো জমেনি রাজধানীর বিপণিবিতানগুলো।

ক্রেতাদের ভিড় তেমন নেই বললেই চলে।

সোমবার (৪ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নিউমার্কেট, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্স, চন্দিমা সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটের বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।  

কেনাকাটার জন্য মধ্যবিত্তদের পছন্দের নিউমার্কেটে ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে অন্য বারের মতো ক্রেতা সমাগম নেই।

ঢাকা নিউমার্কেটের তৃতীয় তলার ‘ইলমা পয়েন্ট’-এর মালিক আবু বকর বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসার অবস্থা তেমন ভালো না। মানুষ কোরবানির গরু-ছাগল নিয়ে ব্যস্ত। অন্যান্যবার এ সময়ে দৈনিক ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। এবার এখন পর্যন্ত এর অর্ধেকও বেচাকেনা নেই।

একই কথায় তাল মেলালেন নিউ মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী লিসান কালেকশনের মালিক জয় বলেন, ‘ভাই বিক্রি আসলেই ভালো না এবার। অন্যান্য বার এ সময়ে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত বিক্রি করেছি। এবার সেটা পারিনি। ’

এ মার্কেটের ‘সাদা মন’ নামে একটি পোশাক দোকানের মালিক সারোয়ার হোসেন বলেন, যা বিক্রি করতেছি আলহামদুলিল্লাহ। তবে, আগের তুলনায় অনেক কম।

‘টপ কালেকশন’ নামে অপর একটি দোকানের কর্মচারী জিসান বলেন, মানুষ আসে। দেখে চলে যায়। বিক্রি তেমন নেই। যা বিক্রি হচ্ছে, কোনোমতে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল দিয়ে মালিক চালিয়ে নিচ্ছেন। এবার বেতন দেয় কিনা সন্দেহ আছে।

এদিকে চাঁদনী চক মার্কেটের জিহাদ ফেব্রিক্স এর কর্মচারী সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর বেচাবিক্রি এখনো ভালো না। তবে, আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে কিছুটা ভালো হবে।

বিক্রি ভালো না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সোহেল বলেন, ‘ভাই একে তো বন্যা তারমধ্যে করোনার প্রভাব, জিনিসপত্রেরও দাম বেড়েছে। মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে না বিলাসিতা করবে। ’ 

তিনি বলেন, অন্যান্য সেক্টরে তো সরকারি বিভিন্ন সহায়তা আসে। আমরা তেমন সহায়তা তো পাই না। ফলে, টেনশনে আছি। দেখা যাক, কি হয়।

এ মার্কেটের ফয়সাল টেক্সটাইলের ফয়সালও বললেন একই কথা। কথাবার্তার ফাঁকে জানালেন, বিক্রি সুবিধার নয়। তবে দুই-একদিন পর কিছুটা বাড়তে পারে বলে ধারণা তার।

এদিকে গাউছিয়া মার্কেট, চন্দিমা সুপার মার্কেটের দোকানিরাও প্রায় একই কথা বলেছেন। তবে সবারই আশা আরও দুই-একদিনের মধ্যে বিক্রি বাড়বে।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ের সামগ্রিক পরিস্থিত নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, দেখেন এই ঈদটা তো কোরবানি কেন্দ্রিক। সেক্ষেত্রে ক্রেতারা ইলেক্ট্রনিক্স আইটেমগুলোর দিকে বেশি ঝুঁকছেন। ফলে, পোশাকের দোকানগুলোতে এর প্রভাব পড়েছে।

এদিকে চলতি বছরের এপ্রিলে নিউ মার্কেট এলাকার দোকানিদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের পর সেখানকার বাজারে প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনার পর আমরা নিউমার্কেটের সামগ্রিক পরিস্থিতি আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে, ঝামেলাটা মূলত মার্কেটের দোকানগুলোতে কম হয়।

তিনি বলেন, ফুটপাতে যারা বসেন, গরম ও ধুলোবালির মধ্যে তাদের বেচাকেনা করতে হয়। মূলত সেখানকার দোকানিরাই অনেক সময় মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। তখন নিবেন না কেন, নিতে হবে জাতীয় সমস্যাগুলো হয়। তবে, আমরা এরমধ্যে ক্রেতাদের অভিযোগ জানানোর জন্য হটলাইন চালু করেছি। আগে থেকেই এটি চালু আছে, এখন আমরা আরও জোরেশোরে প্রচার চালাচ্ছি।

ক্রেতারা নিউমার্কেটে দোকানিদের দুর্ব্যবহার বা কোনো অভিযোগ থাকলে এই নাম্বারগুলোতে (01715801436, 0285610500) ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন বলেও জানান সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২২
এমকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।