ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবিতে শ্রেণিকক্ষের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
ইবিতে শ্রেণিকক্ষের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন

ইবি: নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের দাবিতে অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

 

একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা ও বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা। পরে এই দাবিতে বেলা ১২টার দিকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সম্বলিত উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে কক্ষ বরাদ্দ ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে হুমকির অভিযোগ তুলে তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর বিভাগটির যাত্রা শুরু হলেও বিভাগীয় দফতর ও শ্রেণিকক্ষ ছিল না। পরে বিভিন্ন অনুষদীয় বিভাগে তাদের ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো।  

পরবর্তীতে মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় বিভাগের ও শিক্ষকদের অফিসে এবং নিচতলায় মৌখিকভাবে ‘ধার করা’ একটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলে। তবে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মোট চারটি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা এক কক্ষে সম্পন্ন করতে হিমশিম খান শিক্ষকরা।  

এদিকে মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানা যায়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, একাডেমিক ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চতুর্থ তলার একটি অংশে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অফিস করা হবে বলে জানতে পারেন শিক্ষার্থীরা। অফিস করার জন্য ‘প্রভাব খাটিয়ে’ নকশাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ বিষয়টি জানার পর গত মঙ্গলবার চতুর্থ তলার দুই পার্শ্বে (উত্তর ও পূর্ব) আসবাবপত্র স্থানান্তর করেন।  

পরবর্তীতে বুধবার থেকে তারা বিভাগীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। চতুর্থ তলায় অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন হুমকি-ধামকির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেন। এছাড়াও তারা প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ১০ দিন আগে চতুর্থ তলার অন্য দুই পাশে সদ্য চালু হওয়া একটি বিভাগ আসবাবপত্র ডুকিয়েছে। পরে আমাদের বিভাগীয় শিক্ষকদের জানালে তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। ওই বিভাগের ফার্নিচার ঢুকে গেল অথচ পাঁচ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত একটি বিভাগ কোথাও ঠাঁই পেল না। তাই আমরা বিভাগীয় শিক্ষকদের নির্দেশ অমান্য করে এক প্রকার বাধ্য হয়েই আসবাবপত্র সহ চতুর্থ তলায় উঠে যাই।

পরে একই দাবিতে বেলা ১২টার দিকে উপাচার্য বরাবর তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উপাচার্যের অনুপস্থিতে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য (উপ-উপাচার্য) অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান।  

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি তুলে ধরলে উপ-উপাচার্য তা মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে শিক্ষার্থীরা আজকের মত আন্দোলন স্থগিত করলেও অন্যান্য কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।

বিভাগটির সভাপতি সাহিদা আখতার বলেন, প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও একটি পূর্ণাঙ্গ বিভাগে যা যা লাগে তার কিছুই আমাদের নেই। একটি কক্ষও আমাদের জন্য বরাদ্দ ছিল না। শিক্ষর্থীরা দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে ক্লাস-পরীক্ষা দিয়ে আসছে। এখন তারা আমাদের কোনো কথাই আর শুনছে না। আমরা তাদের বুঝিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরানোর চেষ্টা করছি। প্রশাসনকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করছি প্রশাসন শিক্ষার্থী বান্ধব ও ন্যায্য সিদ্ধান্ত নেবেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ভবনটির চতুর্থ তলার কাজ এখনো শেষ হয়নি। কাজ শেষ হলে ঠিকাদাররা আমাদের ভবন বুঝিয়ে দেবেন। তারপর আমরা বরাদ্দের বিষয়ে আগাবো। সেখানে কারোরই কোনো বরাদ্দ নেই।  

হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে এটা হতে পারে না। যদি কেউ এ রকম হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে গুরুতর অপরাধ করেছে। ভিসি স্যার ক্যাম্পাসের বাইরে আছেন তিনি ফিরলে আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।