ইবি (কুষ্টিয়া): উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম। এমতাবস্থায় সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সরকার যখন সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন উপাচার্যের কণ্ঠসদৃশ এ ধরনের অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তিগত আলাপ জনসম্মুখে প্রকাশ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অনতিবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা আরও বলেন, এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে বের হতে শিক্ষক সমিতিকে সম্পৃক্ত করে ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে (রাষ্ট্রপতির দপ্তর, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, শিক্ষামন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন) চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এসময় তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক শেলীনা নাসরীন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. আনিছুর রহমান, ফোরামের সদস্য অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মো. রবিউল হোসেন, ড. হোসাইন মো. ফারুকী, ড. সাদেক আলী এবং ড. শাহেদ আহমেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ফারহা জেবিন ও মিসেস সালাম নামের দুটি ফেসবুক আইডি থেকে সাতটি অডিও পোস্ট করা হয়। অডিওর কথোপকথনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের বলে দাবি করা হয়। এসব অডিওতে নিয়োগ নিয়ে ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে উপাচার্যকে বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়।
এছাড়াও তাকে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্রনেতাসহ বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়। তবে অডিওটিতে অন্য প্রান্তের কোনো কথা শোনা যায়নি।
অডিওতে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিল হওয়ার কারণ ও আগামীতে বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন বলে দেওয়া হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের ঘটনা নিয়ে এ আলোচনা করা হয়। অডিওতে ওই বিভাগের অলি নামের (সংক্ষিপ্ত নাম) এক শিক্ষক প্রার্থীর নাম ধরে সম্বোধন করতে শোনা যায়।
এ ঘটনায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে উপাচার্যের নির্দেশে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।
বিষয়টি নিয়ে দৈনিক মুজুরি ভিত্তিক কর্মচারী ও চাকরি প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে নানা শ্লোগান দিতে থাকেন। টানা কয়েকদিন উপাচার্যের কার্যালয় তারা তালা দিয়ে অবরূদ্ধ করে রাখেন। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রশাসন ভবনের সামনে মাইকে উচ্চ আওয়াজে অডিও বাজানো হয়।
এছাড়াও অডিওতে উপাচার্যের কথোপকথনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম। একই অভিযোগে ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করে এ বিষয়ে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৩
এমএমজেড