ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কেউ পড়ছেন স্নাতকের বিভিন্ন বর্ষে কেউবা স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। তাদের বাড়ি রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কিংবা রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়।
পড়াশুনার পাশাপাশি এসব মৌসুমি ফল নিয়ে উদ্যোক্তার খাতায় নাম লেখাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এসব শিক্ষার্থীরা। তাদের এ উদ্যোগের ফলে ক্যাম্পাসে তুলনামূলক কম দামে ভালো মানের আম সংগ্রহ করতে পারছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আমের মৌসুমে ক্যাম্পাসসহ সারা দেশে আম সরবরাহ নিয়ে কাজ করেছেন অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের ছাত্র সাব্বির হাসান সৌরভ।
কীভাবে একাজে যুক্ত হয়েছেন জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এই চিন্তা মাথায় আসে লকডাউনের সময়। আমার বাড়ি যেহেতু রংপুরে এখানে প্রচুর হাঁড়িভাঙ্গা আম হয়। যেহেতু লকডাউনের কারণে সব বন্ধ। শুধু কুরিয়ার চালু আছে। তখনই পরিকল্পনা করি ক্যাম্পাসের অনেকেই বাসায় আছে। তাহলে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে সবার কাছে পৌঁছাই। প্রথম দিকে সাড়া কম থাকলেও ধীরে ধীরে আমের চাহিদা বাড়তে থাকে।
ব্যবসার পরিধি কীভাবে বেড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম বছর আমার ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট দিতাম। সেখান থেকে পরিচিতরা অর্ডার দিত। পরের বছর একটা পেজ করার চিন্তা করি। সঙ্গে দুই বন্ধুকে নিই। পেজের নাম দিই কেন্দ্রীয় আম সম্মেলন। এটা থেকে সবচেয়ে বেশি অর্ডার আসে। এবছর হাঁড়িভাঙ্গা আমের সিজন শুরু হয়েছি। আশা করছি, ভালোই বিক্রি হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে আম বিক্রি করে থাকেন। বিজয় একাত্তর হল, কার্জন এলাকায় তারা অর্ডার অনুযায়ী গ্রাহকদের আম সরবরাহ করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরিকৃত প্ল্যাটফরম ঢাবিয়ান বিজনেস কমিউনিটি গ্রুপেও পোস্ট দিয়েও অসংখ্য আম বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি হলের অভ্যন্তরীণ গ্রুপেও শিক্ষার্থীরা আম বিক্রির জন্য পোস্ট দিচ্ছেন। তবে ক্যাম্পাস এলাকায় তারা কুরিয়ার চার্জ ছাড়া আবার অনেক ক্ষেত্রে ৫ টাকা করে রাখছেন।
উদ্যোক্তাদের আরেকজন জনি ইসলাম। এ মৌসুমে ২২০০ কেজি মতো আম বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, কেমিক্যালমু্ক্ত ল্যাংড়া আম সরবরাহ করেছেন।
তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আম বিক্রিতে অনেক বেশি ভূমিকা রেখেছে। শতভাগ কেমিক্যালমুক্ত আম দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
ক্যাম্পাসে ফ্রেশ আম সরবরাহের এমন উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা। বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী আবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে যে-সব আম পাওয়া যায় সেব আমে কেমিক্যাল থাকে। যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাদের এ উদ্যোগের কারণেই প্রতিদিন হলের সামনে থেকে ভালো মানের আম কিনে খেতে পেরেছি।
মাস্টারদা সূর্য সেন হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম হোসাইন বলেন, এটি আসলে শিক্ষার্থীদের ভালো চিন্তা। আমাদের পড়াশুনার পাশাপাশি নির্দিষ্ট একটা এমাউন্টের খরচ প্রয়োজন হয়। শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা হওয়ার মধ্য দিয়ে সেটি ভালোভাবে ম্যানেজ করতে পারবে। শুধু আম ছাড়াও অন্যান্য দ্রব্য নিয়ে ব্যতিক্রমী এসব উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ বয়ে আনবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
এসকেবি/এএটি