ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: মসজিদে রমজানবিষয়ক ধর্মীয় আলোচনার জের ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের একদল শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ফটকে হামলার এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় জড়িতদের মধ্যে ছাত্রলীগের শাহবাগ থানার সাধারণ সম্পাদক তাওহিদুল সুজনকে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে আহতরা চিহ্নিত করেছেন। তিনি ছাত্রলীগের মহানগর দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুর অনুসারী বলে জানা গেছে।
আহতরা জানান, রমজান উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের নিচতলায় মসজিদে প্রোডাক্টিভ রামাদান শীর্ষক আলোচনা করছিলেন আইন অনুষদের ১০-১২ জন শিক্ষার্থী। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন ও বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সভাপতি সিরাজুল হক তাদের এভাবে আলোচনার অনুমতি নেই উল্লেখ করে চলে যেতে বলেন।
সেখান থেকে বের হওয়ার সময় টাওয়ার ফটকের সামনে মোটরসাইকেল থেকে কয়েকজন তাদের ওপর হামলা চালান। এতে অন্তত পাঁচজন গুরুতর আহত হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইন বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী আবু তালহা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের অনুষদেও নামাজের স্থান রয়েছে। তবে সেখানে জামাতের সুযোগ না থাকায় আমরা বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে নামাজ পড়তে যাই।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ছিল রমজানে কী আমল করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা। তখনই ছাত্রলীগের কয়েকজন আমাদের হুমকি দেওয়া শুরু করে। আমরা শুধু আলোচনা করতে বসেছি, তারা আমাদের শিবির ট্যাগ দিয়ে হামলা করে।
আহত রেজোয়ান বাংলানিউজকে বলেন, রমজান কীভাবে কাজে লাগাতে পারি, এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেখানে হঠাৎ কয়েকজন এসে আমাদের বের হয়ে যেতে বলেন। আমরা বের হওয়ার সময় মোটরসাইকেল থেকে নেমে অনেকে আমাদের ওপর হামলা করেন। এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের নিরাপত্তা কর্মী কবির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, হামলার ঘটনা ফটকের বাইরে হয়েছে। আমি তখন ফটক আটকে দেই। তারা মোটরসাইকেলে এসে কয়েকজনকে অনবরত কিল-ঘুষি, লাথি মারে। একজন মারধর থেকে বাঁচতে ভেতরে চলে আসে।
মারামারির দুটি ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
ফুটেজে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লাঠি-সোঁটা দিয়ে ফটকের সামনে মারধর করার চিত্র দেখা গেছে। তবে কারা মারছে, তা স্পষ্ট বোঝা স্পষ্ট করা যায়নি।
অভিযোগ রয়েছে, বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কল্যাণ সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক ছাত্রলীগের সুজনকে ডেকে পাঠান এবং শিবির ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধরের নির্দেশ দেন।
মারধরের ঘটনায় জড়িত সুজনের সঙ্গে সিরাজুলের পূর্ব পরিচয় রয়েছে। সিরাজুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দুপুর ২টা ৪৪ মিনিটে সুজনের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। তবে ডেকে এনে মারধরের বিষয় তিনি অস্বীকার করেন।
এদিকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা তাওহিদুল সুজন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি ওখানে ছিলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আমি কেন মারতে যাব।
মসজিদের ভেতর থেকে তোলা তার ছবি এবং সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেসবুক থেকে আমার ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা ব্যবহার করছে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
আরএইচ