ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

শিক্ষা

আবাসন সমস্যা নিরসনে প্রতীকী অনশনের ঘোষণা দিল ছাত্রীরা

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৫
আবাসন সমস্যা নিরসনে প্রতীকী অনশনের ঘোষণা দিল ছাত্রীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): নারী শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসিকীকরণ নিশ্চিত করার দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতীকী অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল নারী শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের সমস্যা দূরীকরণে দ্রুত ডাকসু নির্বাচনের দাবিও করেছেন তারা।

রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন।

ছাত্রীরা জানান, সোমবার সকাল ১০টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতীকী অনশন করবেন তারা। এতে অংশ নেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের আবাসন বঞ্চিত নারী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু। তিনি বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর নারী শিক্ষার্থীরা শতভাগ আবাসিকীকরণের দাবিতে উপাচার্য মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করি।

স্মারকলিপিতে উল্লিখিত ৭ দাবি হলো-

প্রথম বর্ষেই শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; অবিলম্বে গণরুম বিলুপ্ত করা। অমানবিক ও অস্বাস্থ্যকর গণরুম প্রথা তুলে নিয়ে পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; নতুন ছাত্রী হল চালু না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ভবনে বা ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি প্রদান ও নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ঘোষণা দিতে হবে; ছাত্রীদের নতুন হল বাধ্যতামূলকভাবে মূল ক্যাম্পাসের ভেতরেই নির্মাণ করা এবং দ্রুত নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান করতে হবে; অনতিবিলম্বে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক ছাত্রীদের হল কার্ড জমাদানপূর্বক নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত যেকোনো হলে প্রবেশ এবং ডাইনিংসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণের অনুমতি দিতে হবে; ক্রমান্বয়ে প্রতিটি হলে ডাবলিং ব্যবস্থা তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; নতুন ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে মৈত্রী এবং বঙ্গমাতা হলকে ধারাবাহিকভাবে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে।

ইসরাত জাহান আরও বলেন, স্মারকলিপিতে উল্লেখিত অধিকাংশ দাবি পূরণ করতেই প্রশাসন এক প্রকার অপারগতা প্রকাশ করে। পরে কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি মেয়েদের হলে সিট স্বল্পতা ও গৃহীত মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তিনি আরও বলেন, কোষাধ্যক্ষ আমাদেরকে আশ্বস্ত করেন মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় আগামী তিন বছরের মাঝে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন হল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন হল স্থাপনের আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিট সংকট সমাধানের কোনো অস্থায়ী ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা নিলেও প্রশাসন আবাসিকীকরণের দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক। উপরন্তু স্কলারশিপের অর্থ সহায়তা কবে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছবে সে সম্পর্কেও আমরা কোনো সদুত্তর পাইনি।

অস্থায়ী আবাসন ও পরবর্তীতে মূল ক্যাম্পাসের ভেতরে নারীদের স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য আগত প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থীরা আবাসনের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে অনিরাপদ পরিবেশে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে। এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া রীতিমত প্রহসনের শামিল। কাজেই নারী শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা ও অন্যান্য দাবি আদায় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নারীবান্ধব করে তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এ সময় তিনি এসব দাবিদাওয়া পূরণের জন্য ডাকসু নির্বাচন জরুরি বলেও মন্তব্য করেন। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া উপস্থাপনের একটি জায়গা হলো ডাকসু। অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার মাধ্যমে সেই জায়গাটি তৈরি করে দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
এফএইচ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।