ঢাকা: আপদকালীন নিয়োগের জন্য ‘শিক্ষক পুল’ এবং চার বছর আগে ‘প্যানেল’ গঠন করা হলেও এসব চাকরিপ্রার্থীরাই এখন প্রাথমিক শিক্ষার গলার কাঁটা। এসব প্রার্থীর নিয়োগ জটিলতায় আটকে গেছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া।
‘শিক্ষক পুল’ জটিলতায় সর্বশেষ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ‘পুল’ শিক্ষকদের কেন নিয়োগ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর বলছে, ১০ শতাংশ কোটা রেখে এ নিয়োগ জটিলতা দূর করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
কিন্তু পুলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ না দেওয়ায় গত ১৯ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। পুলভুক্ত ৫২ জন শিক্ষককে নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
অপেক্ষমান প্রার্থী রেখে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে চায় হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতেও বলা হয়।
২০১১ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি পর, উত্তীর্ণ ৪৪ হাজার ৬০৯ জনের মধ্যে ১২ হাজার ৭০১ জনকে নিয়মিত সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। উত্তীর্ণ বাকি ১৫ হাজার ১৯ জনকে ভবিষ্যতে নিয়োগের জন্য ‘পুল শিক্ষক’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। এরপর নতুন নীতিমালা অনুযায়ী পুলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ শুরু হলেও সবাই নিয়োগ পাননি। নিয়োগের জন্য তারা আদালতের শরণাপন্ন হন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০১০’ এ ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাক্রম তালিকা ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ১০ হাজার ২২৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরপর ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের ঘোষণা দেওয়ার পর সেই প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বেসরকারি বিদ্যালয় সরকারি হওয়ায় এখন আর প্যানেল থেকে নিয়োগের সুযোগ নেই।
নিয়োগের দাবিতে প্যানেলের নওগাঁ, যশোর, পীরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার প্যানেলের প্রার্থীরা উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রেজিস্টার্ড বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর জন্য গঠিত প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বন্ধ। এ বিষয়ে আদালতকে জানানো হবে।
আর পুলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ জটিলতা কাটাতে আদালতে আপিল করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে তাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা রেখে দিয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চিন্তা চলছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন অনুযায়ী সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
শিগগিরই দু’দফায় আরো ২৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান ডিজি আলমগীর হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪