ঢাকা: অপ্রকাশিত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় তথ্য প্রকাশের নামে অসৎ উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশন করে ৩৪তম বিসিএস নিয়োগ প্রার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছে কনফিডেন্স কোচিং সেন্টার।
৩৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর বিভিন্ন ক্যাডারে সাময়িকভাবে সুপারিশকৃতদের ‘ক্যাডার’ উল্লেখ করায় বিসিএস কনফিডেন্স কোচিং সেন্টারের এই কার্যক্রমকে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) বলছে, সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত এবং অনভিপ্রেত।
গত ২৯ আগস্ট ৩৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে কমিশন। তাদের সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হলেও এখনও নিয়োগ হয়নি।
সোমবার (০৭ সেপ্টেম্বর) একটি সংবাদপত্রে সংবর্ধনার নামে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে মেধাস্থান উল্লেখ করে বিসিএস ক্যাডার প্রত্যাশীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। মঙ্গলবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটায় এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এরপরই শুরু হয় ৩৪তম বিসিএসে সুপারিশকৃত এবং চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি।
বিষয়টি নজরে এলে পিএসসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্যে সাময়িকভাবে সুপারিশকৃত প্রার্থীদের নাম এখনও পিএসসি আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের কাছে পাঠায়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপারিশকৃত প্রার্থীদের নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ক্যাডার অফিসার হিসেবে উল্লেখ করা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত এবং অনভিপ্রেত।
তাছাড়া পিএসসি প্রকাশিত ফলাফলে সুপারিশকৃত প্রার্থীদের জাতীয় মেধা প্রকাশ না করা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে উক্ত বিজ্ঞাপনে বিভিন্ন ক্যাডারের নাম উল্লেখ করে জাতীয় মেধা তালিকায় তাদের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা ডায়ানা ইসলাম সিমা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত অপ্রকাশিত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় তথ্য অর্থাৎ জাতীয় মেধা তালিকার অবস্থান প্রকাশের নামে এরূপ বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রিন্ট মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন আকারে সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূতভাবে প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কোচিং সেন্টার কর্তৃক জনমনে এবং নিয়োগ প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত, অবাঞ্ছিত এবং অনভিপ্রেত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী এ ধরনের বিধিবহির্ভূত বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায় প্রয়োজনে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজধানীর ফার্মগেটে ২৬ ইন্দিরা রোডের ঠিকানা দিয়ে কনফিডেন্স কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, পিএসসির উদ্যোগের ফলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে কনফিডেন্স কোচিং সেন্টার।
সংবর্ধনার বিজ্ঞাপনে থাকা মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নিজের পরিচয় গোপন রেখে এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, মাস্টার্সের পরীক্ষার কারণে অনুষ্ঠানটি সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে জানানো হবে।
পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম জানানো দরকার নেই।
নিষিদ্ধ থাকলেও কনফিডেন্সসহ রাজধানীতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এমন কোচিং সেন্টারগুলো নানা রকম মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে আসছে। মূলত শিক্ষার্থীদের বাগিয়ে এনে অর্থ উপার্জনই এসব কোচিংয়ের উদ্দেশ্য।
কনফিডেন্স নামের এই কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন পিএসসির এক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৫
এমআইএইচ/এবি
শিক্ষা
রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য প্রকাশ করলো কনফিডেন্স কোচিং!
ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।