জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): নির্যাতনের বিচার চেয়ে বিপাকে পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ও গণিত বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদ।
ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মীদের হাতে মারধর-লাঞ্ছনার পর বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেন তাকে আধা ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন।
সোমবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হলের বি-ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।
হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট বন্ধুর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় সেলিম আহমেদকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মী ও ৪৩তম ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক রাফি, ফার্মেসি বিভাগের মাহমুদুল হাসান এবং
ইতিহাস বিভাগের বাঁধন বসাকসহ ৭/৮ জন। পরে সেলিম বিচার চেয়ে ওই তিনজনের নাম উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেন হলের বি-ব্লকে সেলিমের কক্ষে গিয়ে তাকে আধা ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন।
সেলিমকে উদ্দেশ করে সানোয়ার হোসেন বলেন, তুই আধা ঘণ্টার মধ্যে হল ছাড়বি। আধা ঘণ্টার পর এসে যেন তোরে হলে না দেখি।
সেলিম আহমেদ বলেন, মারধরের শিকার হওয়ার পর আমি এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছি না। পাশাপাশি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার ওপর সানোয়ার ভাই আমাকে হল ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছেন।
হল ছাড়ার নির্দেশের বিষয়টি অস্বীকার করে সানোয়ার হোসেন বলেন, জুনিয়রদের মারধর করায় আমি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরও সে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেছে। তাই, আমি শুধু তাকে বলতে গিয়েছিলাম ‘ছোটভাই, আমার সম্মান রাখলি না’।
মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত। ক্যাম্পাসে ফিরে তার সঙ্গে কথা বলবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
গত সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে এক বন্ধুকে নিয়ে হলের সামনে চায়ের দোকানে চা খেতে যায় সেলিম আহমেদ। চা খেয়ে বের হয়ে আসার সময় তার বন্ধুর পা পিছলে ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মী মাহমুদুল হক রাফির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মাহমুদুল হক রাফি ক্ষিপ্ত হয়ে সেলিমের বন্ধুর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এ সময় সেলিম দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহমুদুল সেলিমের বুকে লাফি মারে। সঙ্গে সঙ্গে আশপাশে থাকা মাহমুদুলের ৯/১০ জন বন্ধু সেলিমকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে মাহমুদুল বাঁশ দিয়ে সেলিমের বুকে ও ঘাড়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে।
এতে সেলিম অচেতন হয়ে পড়লে হলের শিক্ষার্থীরা তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৫
এবি