ঢাকা: অষ্টম বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের প্রতিবাদ ও দাবিতে তিনদিনের কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) থেকে তিনদিনের কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সমিতির মহাসচিব আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বাংলানিউজকে জানান, সব সরকারি কলেজ শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তিনদিন কর্মবিরতি চলবে।
শিক্ষকরা জানান, সরকারি কলেজ, আলিয়া মাদরাসা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ (টিটি) কলেজ, গভ. কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অফিস ও প্রকল্পে কর্মবিরতি চলছে। দেশে ২৭০টি সরকারি কলেজ, তিনটি আলিয়া মাদ্রাসা, ১৪টি টিটি কলেজ ও ১৬টি কমার্শিয়াল কলেজে শিক্ষা ক্যাডারের ১৫ হাজার কর্মকর্তা রয়েছেন।
গত ২২ জানুয়ারি সমিতির সাধারণ সভায় সব সরকারি কলেজে ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষকদের দাবি না মানা হলে ৬ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করা হবে।
এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষাসহ ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে।
১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেও দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা রয়েছে।
অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর অধ্যাপকদের পদমর্যাদা ও বেতনক্রম অবনমনের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। গত ৪ ও ৫ জানুয়ারি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।
অষ্টম বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল রাখা ছাড়াও শিক্ষকদের পদ আপগ্রেডেশন এবং বৈষম্য নিরসনে ‘সুপারনিউমারারি পদ’ সৃষ্টির মাধ্যমে পদোন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
শিক্ষকরা বলছেন, অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পঞ্চম থেকে সরাসরি তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক হতেন। চতুর্থ গ্রেডের অধ্যাপকদের অর্ধেক সিলেকশন গ্রেড পেয়ে তৃতীয় গ্রেড পেতেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড বাতিলের ফলে অধ্যাপকদের চতুর্থ গ্রেড থেকেই অবসরে যেতে হবে। ফলে মর্যাদা ছাড়াও বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
বিসিএস শিক্ষা সমিতি অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো ১ জুলাই থেকেই পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকদের অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে তৃতীয় গ্রেডের বেতন দিতে আদেশ জারির দাবি জানিয়ে আসছেন।
এছাড়া নায়েম মহাপরিচালক, এনসিটিবি চেয়ারম্যান, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা সদরের অনার্স ও মাস্টার্স কলেজের অধ্যক্ষের পদকেও গ্রেড-১ এ উন্নীত এবং মাউশি, নায়েম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক; অনার্স/মাস্টার্স কলেজের উপাধ্যক্ষ, শিক্ষা বোর্ডের সচিব এবং এনসিটিবির সদস্যদের পদকে দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীতের দাবি করে আসছে বিসিএস শিক্ষা সমিতি।
অনার্স ও মাস্টার্স রয়েছে এমন বিভাগে দ্বিতীয় গ্রেডের একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি এবং বিকল্প ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখার দাবি রয়েছে তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস