আগামী ১৫ জানুয়ারি (রোববার) থেকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সকল বিভাগে একযোগে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গোলকধাঁধায় রয়েছেন নতুন এই তিন বিভাগের ১২০ শিক্ষার্থী। দুঃচিন্তায় তাদের অভিভাবকরা।
জানা যায়, গত বছরের ৮ আগস্ট জবি উপাচার্য ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ও বর্তমান চাকরির বাজারে চাহিদা থাকায় দু’টি বিভাগ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন এ বিভাগগুলো হলো, ‘ল্যান্ড ল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’, ‘বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি’ ও ‘জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’।
এরপর ওই বছরের ১৪ আগস্ট ভিন্ন ভিন্ন বিভাগ থেকে প্রেষণে তিনজন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয় প্রশাসন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি শিক্ষাবর্ষেই (২০১৬-১৭) নতুন এই তিন বিভাগে শিক্ষার্থীও ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বিভাগ খোলার ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এসব বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়নি কোনো শিক্ষক। ব্যবস্থা করা হয়নি প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষেরও।
এদিকে, ক্লাসরুম সংকটের কারণে অনেক বিভাগেই সৃষ্টি হয়েছে সেশন জট। কয়েকটি বিভাগের ক্লাসরুম সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একীভূত হওয়া পগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্লাসরুম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছে বিভাগগুলো। অনেক বিভাগেই দেখা যায় এক ব্যাচের ক্লাস শেষ হতেই অন্য ব্যাচের ক্লাসরুম দখলের প্রতিযোগিতা।
এ অবস্থায় কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই নতুন বিভাগ খোলা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে দুদিকেই মত দিচ্ছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কেউ বলছেন এভাবে শুরু করা উচিত হয়নি আবার কেউ বলছেন, কিছু পেতে হলে কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতেই হয়, তাই এটা নেগেটিভলি নেওয়ার কিছু নেই!
‘ল্যান্ড ল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ বিভাগে ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তো জানি না আমাদের বিভাগে কোনো শিক্ষক ও ক্লাসরুম নেই। আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম! যদি এমনটা হয় তাহলে কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না!
প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত তিন বিভাগের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন বিভাগ হিসেবে যেভাবে শুরু করা যায় তার পুরোপুরি পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক ও নিজেদের প্রচেষ্টায় কোনো ঝামেলা ছাড়াই নতুন বিভাগ এগিয়ে যাবে বলেও মনে করেন তারা।
খুব দ্রুত ইউজিসি থেকে অনুমোদন নিয়ে এসব বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ হবে এবং নতুন একাডেমিক বিল্ডিং এর ৮ম ও ৯ম তলার কাজ শেষ হলেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে বলেই মত তাদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বিভাগের মতো এ তিন বিভাগের ক্লাসও ১৫ তারিখ থেকেই শুরু হবে। আপাতত অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া হবে। এছাড়া আমরা কিছু চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের চিন্তা করছি। তবে ইউজিসি থেকে অনুমোদন পেলে এসব বিভাগে পুরো মেয়াদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
ডিআর/এমজেএফ