হাইকোর্টের এ সংক্রান্ত আদেশের পৌনে দুই মাসের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে এসব কাগজপত্র জমা দেন মাহামুদুল হক।
বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৫ দিনের মধ্যে মাহমুদুল হককে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ও ২২তম সিন্ডিকেট সভায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে তিনজন শিক্ষককে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। যদি কোনো প্রার্থী যোগদান না করেন সে ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধাক্রম অনুসারে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু নিয়োগ বোর্ড ও সিন্ডিকেট সভায় মনোনীত নিয়োগের জন্য তিনজনের মধ্যে প্রথমজন আবদুল কাদের মণ্ডল ওই পদে চাকরিতে যোগদান করেননি।
এ অবস্থায় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সিন্ডিকেট সভায় মনোনীত প্রথম চাকরিপ্রার্থী মাহামুদুল হকের নিয়োগ পাওয়ার কথা। কিন্তু দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবদুল মিয়া অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেন। তিনি অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রথমজনকে ডিঙ্গিয়ে ওই তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তিকে অস্থায়ী ভিত্তিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেন। যা ২২তম সিন্ডিকেট সভায় তিনি অনুমোদন করিয়ে নেন।
পরে সিন্ডিকেট সভায় ও নিয়োগ বোর্ডের মনোনীত প্যানেলের প্রথম স্থানে থাকা মো. মাহমুদুল হকের করা রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করায় ওই শিক্ষক পদের নিয়োগ তিনমাসের জন্য বন্ধ ও আবেদনকারীর জন্য সংরক্ষণ করার আদেশ দেন। ফলে বিভাগটির শিক্ষক নিয়োগ জটিলতা দেখা দেয়। ফলে শিক্ষক সংকটে বিভাগটিতে সেশনজট দেখা দেয়।
এমতাবস্থায় গত ১৫ অক্টোবর হাইকোর্ট মাহমুদুল হককে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দেন। তবে অফিসিয়ালি কোন কাগজ হাতে না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
আদেশের প্রায় পৌনে দুইমাসের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের প্রত্যায়িত অবিকল প্রতিলিপি ও নিজের যোগদানের আবেদনপত্র রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রদান করেন নিয়োগ বঞ্চিত মাহামুদুল হক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর বাংলানিউজকে বলেন, এখনো অফিসিয়ালি কোন কাগজ আমাদের কাছে আসেনি। উনি যেটা আজ দিয়েছেন তা নকল কপি (ফটোকপি) । অফিসিয়ালি কাগজ পেলেই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিষয়টি জানতে চাইলে রিটকারী মাহমুদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজেই হাইকোর্ট এর কাগজ (প্রত্যায়িত অবিকল প্রতিলিপি) পৌঁছে দিয়েছি রেজিস্টার অফিসে। এখানে আর অফিসিয়ালের অজুহাত দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। গতকাল থেকে আগামী ১৫ দিন অপেক্ষা করবো। এর মধ্যে নিয়োগ দেওয়া না হলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬,২০১৭
আরআই