ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

‘যৌন নিপীড়ক’ মাদ্রাসা-অধ্যক্ষর পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
‘যৌন নিপীড়ক’ মাদ্রাসা-অধ্যক্ষর পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এই অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন তারা।

রাজশাহী: ছাত্রকে যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত রাজশাহীর এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষর পক্ষ নিয়ে পুলিশ মাদ্রাসাটির শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মহানগরের ছোটবনগ্রাম এলাকায় অবস্থিত ‘জামিয়া রহমানিয়া’ নামের একটি মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এই অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন তারা। 

মহানগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ আবদুল জব্বার ওরফে জিহাদীর বিরুদ্ধে ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের দুইটি মামলা আছে। এর মধ্যে একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরের বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা।

কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অভিযুক্ত অধ্যক্ষর পক্ষ নিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা তাদের হয়রানি করে যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই মাদ্রাসার এক ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ জিহাদীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর জামিন নিয়ে তিনি ফের মাদ্রাসায় যোগ দেন।

কিন্তু এ বছরের ২৫ অক্টোবর আরেক ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে পুলিশ তাকে ফের গ্রেফতার  করে। সম্প্রতি তিনি জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়েছেন। এর আগে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এখন চাকরি ফিরে পেতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এজন্য হয়রানি করতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জুলফিকার আলী বলেন, সম্প্রতি অধ্যক্ষ জিহাদী মাদ্রাসার ভেতরে তার বাড়িতে গিয়ে উঠেন। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ জিহাদীর পক্ষ নিয়ে সবাইকে হুমকি-ধমকি দেন। তিনিই পরে জিহাদীকে তার মাদ্রাসা কাম্পাসের বাসায় তুলে দিয়ে আসেন।

জুলফিকার আলী বলেন, গতবছর যখন অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে তখন রমজান মাস ছিল। অধ্যক্ষ জিহাদী মসজিদে এতেকাফে ছিলেন। তাই তারা বিশ্বাসই করেননি, তিনি এমন কাণ্ড করেছেন। এজন্য জামিনের পর তাকে মাদ্রাসায় নেওয়া হয়। কিন্তু এবছর তিনি একই রকম কুকর্মে রত অবস্থায় হাতেনাতে আটক হয়েছেন। নির্যাতিত ছাত্র আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। তাই মাদ্রাসা কর্তপক্ষ, ছাত্ররা এবং তাদের অভিভাবকরা সবাই জিহাদীর শাস্তি চান।  

কিন্তু অজানা কারণে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে অধ্যক্ষ জিহাদীর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দেন এসআই গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সম্প্রতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিছিল বের করা হয়েছিল। এটা তারা করতে পারেন না। এজন্যই তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এর মানে এই নয় যে, অধ্যক্ষ জিহাদীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এসএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।