ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বেরোবিতে নীল দলের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যমূলক হয়রানির অভিযোগ

বেরোবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
বেরোবিতে নীল দলের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যমূলক হয়রানির অভিযোগ স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

বেরোবি (রংপুর): বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের অনুসারী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।  

মঙ্গলবার (২৯ মে) দুপুরে নীল দলের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের সঠিক সময়ে প্রমোশন না দেওয়া, চাকুরি স্থায়ীকরণে সময়ক্ষেপণ,  শিক্ষাছুটি বিষয়ে হয়রানি করার অভিযোগ তুলে উপাচার্য বরারবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর অনুপস্থিতিতে তার পিএস আমিনুর রহমানের কাছে এ স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।

 

নীলদলের সভাপতি ড. কুমার নিতাই ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের ইবনে তাহের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, নীল দলের শিক্ষকদের যোগ্যতা থাকার পরও তিন বিভাগের তিনজন শিক্ষকের প্রমোশন বা আপগ্রেডেশন করেনি বোর্ড। প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক উন্নীত হওয়ার সকল শর্ত পূরণ করলেও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক নুরনবী ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আনোয়ার হোসাইন ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক চার্লস ডারউইনের ব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ার কারণ তারা নীলদলের সদস্য।

দাবি করা হয়, প্রমোশন বা আপগ্রেডেশন হতে যাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে গণিত বিভাগের প্রভাষক ইসমাইল হোসেন নীলদলের সদস্য ছিলেন। প্রশাসনের চাপে কিছুদিন আগে তিনি নীলদল থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং পদত্যাগ করা মাত্রই তার প্রমোশন বা আপগ্রেডেশন বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৩১ মে। নীলদলের অপর তিন শিক্ষক ড. নিতাই কুমার ঘোষ, আমির শরিফ ও শেখ মাজেদুল হক সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার শর্ত পূরণ করলেও তাদের প্রমোশন দেওয়া হচ্ছে না।  

এতে আরও অভিযোগ করা হয়, নীল দল করার কারণে শিক্ষাছুটিতে থাকা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারের উচ্চডিগ্রি সম্পন্ন হওয়ার আগেই শিক্ষাছুটি বাতিল করা হয়। পরে ওই শিক্ষক শিক্ষাছুটি পাওয়ার জন্য গত ২৮ মে নীলদল থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।  

প্রশাসনের এই ধরনের পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ডকে নীলদলের শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবার ষড়যন্ত্র বলে স্বারকলিপিতে দাবি করা হয়।

এছাড়াও স্মারকলিপিতে যোগ্যতা অর্জনকারী সব শিক্ষককে আপগ্রেডেশন বা প্রমোশন দেওয়া, অস্থায়ী পদে নিয়োজিত শিক্ষকগণের চাকুরি স্থায়ীকরণে ব্যবস্থা করা, শিক্ষাছুটি প্রত্যাহার করে যে হয়রানী করা হচ্ছে তা বন্ধ করা এবং শিক্ষাছুটি প্রাপ্যদের সহজে শিক্ষাছুটি মঞ্জুর করা, নীলদলের শিক্ষকদের উপর প্রশাসন কর্তৃক উদ্দেশ্যমূলক হয়রানী বন্ধ করা, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের অনুমোদন না নিয়ে ইচ্ছামাফিক যোগ্যতা নির্ধারণ করে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সম্প্রতি যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করার পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়।  

এসময় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন তারা।
 
এ বিষয়ে নীলদলে সাধারণ সম্পাদক ও লোক-প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জুবায়ের ইবনে তাহের বাংলানিউজকে বলেন, আমরা স্মারকলিপিতে যে সব দাবি তুলে ধরেছি সবগুলোই যোক্তিক। নীলদল করার জন্য কেউ বৈষম্যের শিকার হবে এটা কখনও কাম্য নয়। শিক্ষকদের মধ্যে যদি বৈষম্য থাকে তাহলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই লিখিতভাবে শিক্ষকদের মৌলিক দাবিসমূহ আমরা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরেছি। আশা করি অতিদ্রুত আমাদের দাবিসমূহ বাস্তবায়নে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
এনএইচটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।