প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নিকটস্থ বা পার্শ্ববর্তী নতুন জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয় এবং নতুন জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয় থেকে নিকটস্থ বা পার্শ্ববর্তী পুরনো বিদ্যালয়ে বদলি করে বদলিকৃত শিক্ষকদের তালিকা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষাকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ও ওই বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত শিক্ষকদের জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে সারাদেশে জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়সহ মোট ৬৫ হাজার ৫৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৪ নং লক্ষ্য অর্জনে সরকার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত ও একীভূত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, নতুন জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়গুলো শুধুমাত্র আত্মীকরণকৃত শিক্ষকদের দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলমান থাকায় ওই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষারমান কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
‘বাংলাদেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে মানসম্মত ও একীভূত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নবসৃষ্ট জাতীয়করণ হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয় করা জরুরি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নতুন জাতীয়করণ হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে সংমিশ্রণ ঘটালে সারাদেশে প্রতিটি বিদ্যালয়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ’
এমন অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নিকটস্থ বা পার্শ্ববর্তী নতুন জাতীয়করণ হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং নতুন জাতীয়করণ হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নিকটস্থ বা পার্শ্ববর্তী পুরনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করে বদলিকৃত শিক্ষকদের তালিকাসহ প্রতিবেদন আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুর রশীদ স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটি অবগতি ও কার্যার্থে সব জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষার বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিষার, উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারকে পাঠানো হয়েছে।
তবে বিদ্যমান বদলি নীতিমালার বাধ্যবাধকতা নিয়ে এ নির্দেশনায় কিছু বলা হয়নি।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা মানোন্নয়নের জন্য পারস্পরিক বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পারস্পরিক বদলি বা সমন্বয় করা হলে এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার জন্যই মঙ্গলজনক হবে। দেখা যাচ্ছে পুরনো বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা শিক্ষক আছে, তিনি নতুন জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়ে গেলে সেখানে অর্জিত জ্ঞানের ভিত্তিতে শিক্ষাদান করতে পারবেন।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে শিক্ষক বদলির পুরনো নীতিমালার ব্যত্যয় হলেও পার্শ্ববর্তী বা নিকটস্থ বিদ্যালয়ে বদলি করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা শৈথিল্য গ্রহণযোগ্য হবে না এবং বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
এমআইএইচ/জেডএস