কেন্দ্রীয় একজন ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগ করেছেন, ছাত্র রাজনীতি যারা করে তাদের অনেক সময় পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া হয়, যা খুবই দুঃখজনক।
আর শিক্ষামন্ত্রী দুই সপ্তাহের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতারা বৈঠক করেছে।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাম্প্রতিককালে এটাই প্রথম কোনো শিক্ষামন্ত্রীর ছাত্র নেতাদের সঙ্গে এমন আয়োজন। এ ব্যতিক্রমী আয়োজনের ফলে ছাত্র নেতারা মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মত বিনিময়কালে ছাত্র নেতারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ তুলে ধরেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যা, ট্রান্সপোর্ট, ক্যান্টিনের সমস্যা, খাবার-দাবার সমস্যা, লাইব্রেরির সমস্যা, নিরাপত্তা সমস্যা, ইন্টারনেট সমস্যার সমাধান, পরীক্ষায় কোডিং সিস্টেম চালু করা, ছাত্র-সংসদ নির্বাচন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধীরগতি এবং বিভিন্ন বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে আলোচনা করেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ছাত্রলীগকে ছাত্রদের দাবি দাওয়া আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে, পাশাপাশি শিক্ষকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ অনেক সময় তাদের স্বায়ত্তশাসন অপব্যাবহার করে। ছাত্র রাজনীতি যারা করে তাদের অনেক সময় কম নম্বর দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যা খুবই দুঃখজনক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মন্ত্রী আগামী ১০ দিনের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ লিখিতভাবে তাকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, তিনি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখিত সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত পিডিদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে বৈঠকে আশ্বাস দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। শিক্ষার গুণগত উন্নয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা খুবই জরুরি।
তিনি ছাত্রলীগকে শিক্ষাঙ্গনে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে কোনো রকমের সমস্যা হলে তা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ব্যর্থ হলে তা নিয়ে তার (শিক্ষামন্ত্রী) সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন। মন্ত্রী আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে নিষেধ করেন।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষাঙ্গনে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে ছাত্রলীগকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। শিক্ষকদের দলাদলিতে ছাত্র নেতাদের না জড়াতে মন্ত্রী নির্দেশ দেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ছাত্র হিসেবে ছাত্রদের প্রধান কাজ হল লেখা পড়া করা এবং ওই লেখাপড়া কাজে লাগিয়ে নিজের ক্যারিয়ার ও বাংলাদেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখা। দেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন আছে, এ আইনের মধ্যে থেকে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
এমআইএইচ/এসএইচ