শনিবার (২৬ অক্টোবর) দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপিত হয়।
এদিন সকালে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে থেকে সংগঠনের সদস্যরা শোভাযাত্রা বের করেন।
এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বেলুন উড়িয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেন।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও নাট্যজন অধ্যাপক মলয় ভৌমিকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অধিবেশন সঞ্চালনা করেন প্রাক্তন সদস্য শাহ আলম । এতে সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মজুমদার স্বাগত বক্তব্য দেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হামিদুজ্জামান রবি এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ভূমিকা রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. শামসুজ্জোহা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইউনুস জীবন দিয়ে অশুভ চিন্তা, শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
তিনি বলেন, আজ যখন দেখি রাজনৈতিক দলের সভাপতি হওয়ার জন্য কেউ উপাচার্যের পদ ছেড়ে দিতে চান, তখন আমাদের লজ্জিত হতে হয়। জানি না তিনি লজ্জিত হন কিনা। যখন দেখি ছাত্র সংগঠন তার অতীত ঐতিহ্য ভুলে টর্চার সেলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে তখন তা আমাদের কলঙ্কিত করে। সর্বক্ষেত্রে আমরা অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছি। ক্যাসিনো কিন্তু আমাদের ঐতিহ্য নয়। আমাদের সংস্কৃতি মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা।
বিশেষ অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, একটি সংগঠনের ৫০ বছর পূর্তি এমনি এমনি হয় না। একে দাঁড় করানোর পেছনে অনেকের পরিশ্রম থাকে। সংগঠনের যিনি নেতৃত্বে থাকেন তাকে মূল ভূমিকা রাখতে হয়। সংগঠনের সদস্যরা যদি তাকে সহযোগিতা করে তবে সংগঠন এগিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক হতে অবশ্যই সততা, নিষ্ঠা, সাহস থাকতে হবে। আমার মনে হয়, একজন সাংবাদিকের যত রিস্ক, একজন উপাচার্যেরও তত রিস্ক থাকে না। কারণ সাংবাদিকের সত্য কথা যে সবার ভালো লাগবে এমন নয়।
অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমাদের সংবিধানে যে চারটি মূলমন্ত্র আছে এটি তার একটি। রাষ্ট্র কোনো ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করবে না তবে সবাই সবার মতো ধর্ম পালন করতে পারবে। কিন্তু পঁচাত্তরের পর তরুণ-যুবকদের কাছে অসাম্প্রদায়িকতা নিয়ে, জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য অনেক মহৎ। তবে আমি মনে করি এখান সাংবাদিকদের কেবল দেশে নয়, সারা বিশ্বে প্রভাব ছড়িয়ে পড়া উচিত। বর্তমানে বিশ্বময় সাংবাদিকতা একটি সংকটময় জায়গায় আছে। তিনি সাংবাদিকদের বিশ্বের মানবসমাজকে আলোকিত রাখা, প্রগতির দিকে নিয়ে যেতে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেএম শহীদুল হকের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পর অধ্যাপক মলয় ভৌমিক সভাপতির বক্তব্য দেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওসমান গণি তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে সিনেট ভবনে সংগঠনের আমন্ত্রিত অতিথি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রাক্তন-বর্তমান সদস্যদের স্মৃতিচারণ শুরু হয়। বিকেলে সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হয়। সন্ধ্যায় ধ্রুপদালোক নৃত্যনাট্য ‘বিদায় অভিশাপ’ পরিবেশন করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
এসআইএস