ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষা ছুটি ছাড়াই যুক্তরাজ্যে গেছেন রাবির সাবেক উপাচার্যের জামাতা

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
শিক্ষা ছুটি ছাড়াই যুক্তরাজ্যে গেছেন রাবির সাবেক উপাচার্যের জামাতা

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিতর্কিত সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুস সোবহানের জামাতা ও রাবির ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) প্রভাষক এটিএম শাহেদ পারভেজ শিক্ষা ছুটি ছাড়াই উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

তার কাছে থাকা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ ও পঞ্চম ব্যাচের পরীক্ষার খাতা তিনি মূল্যায়ন করে নম্বরপত্র অনুষদে জমা দিয়ে যাননি।

আবার দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জমা না দেওয়ায় পেছানো হয়েছে পরীক্ষা।

এসব অনিয়ম তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৫তম শিক্ষা পরিষদের সভায় এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে চাইলে শিক্ষা ছুটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অনুষদে বা ইনস্টিটিউটে আবেদন করতে হয়। কিন্তু প্রভাষক শাহেদ পারভেজ শিক্ষা ছুটি না নিয়েই গত অক্টোবরে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের বোর্নমাওথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ভর্তি হয়েছেন। তার কাছে থাকা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ ও পঞ্চম ব্যাচের পরীক্ষার খাতা তিনি মূল্যায়ন করে নম্বরপত্র অনুষদে জমা দেননি।  

নম্বরপত্র চেয়ে শাহেদ পারভেজের পরিবারের সঙ্গে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। এরপর শাহেদ পারভেজের স্ত্রী ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানের কন্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক সানজানা সোবহান ওই দুই কোর্সের নম্বরপত্র ইনস্টিটিউটে জমা দেন। তবে সেই নম্বরপত্রে প্রভাষক শাহেদ পারভেজের স্বাক্ষর নেই। অন্যদিকে দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রভাষক শাহেদ পারভেজ জমা দেননি। যার ফলে এ বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে পরীক্ষা পেছানোর নোটিশ দিয়েছে ইনস্টিটিউট। এ বর্ষের ক্লাস অ্যাসেসমেন্টের নম্বরপত্রও জমা দেননি প্রভাষক শাহেদ পারভেজ।

এছাড়া ওই ইনস্টিটিউটের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের দুই শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে ছিলেন প্রভাষক শাহেদ পারভেজ। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় সেই দুই শিক্ষার্থীর দায়িত্ব পালন করছেন না তিনি।

জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক জিন্নাত আরা বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর আমরা বোর্ড অফ গভর্নেন্সের সভা করেছি। সেই সভায় বিভিন্ন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। শাহেদ পারভেজ ইনস্টিটিউট থেকে ছুটি না নিয়েই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এমনকি তিনি কাউকে কোনো কিছুই জানাননি। আমরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, প্রভাষক শাহেদ পারভেজ আইবিএ থেকে ছুটি না নিয়েই চলে যাওয়ায় আইবিএ কিছুটা বিপদে পড়েছে। নম্বরপত্র জমা না দেওয়াসহ যেসব অনিয়মের অভিযোগ এসেছে, সেসব অন্যায় অনিয়মের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংয়ের জন্য এ কমিটি হয়েছে। আমরা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করে সুপারিশ সিন্ডিকেটে পাঠাবো। তারপর সিন্ডিকেট সেই সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রভাষক শাহেদ পারভেজের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।