ঢাকা: এ বছর ঈদ-উল-ফিতরের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. জাহাংগীর আলম।
বুধবার (১৫ মার্চ) ১৬ তম কমিশন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জাহাংগীর আলম।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোটার করার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদের (ঈদ-উল-ফিতর) পর আবুধাবিতে টিম পাঠিয়ে কার্যক্রম শুরু করবো। প্রত্যেক ব্যক্তি (যারা এনআইডি চান) দূতাবাসে আউটসোর্সিংয়ের লোকবলের কাছে এসে তথ্য দেবেন। তাদের তথ্য অনলাইনে আমাদের সংশ্লিষ্ট এলাকায়, উপজেলা বা থানা কর্মকর্তার কাছে চলে যাবে। কর্মকর্তারা তথ্য যাচাই বাছাই করে সত্যতা পেলে নিশ্চিত করবেন। তারপর ফিঙ্গার প্রিন্ট ও অন্যান্য জিনিস নেওয়া হবে। তারপর এখান থেকে স্মার্টকার্ড তৈরি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে পাঠাবো। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সেটি নেবেন। সিস্টেমে ওকে হয়ে গেলে তিনি নিজের মোবাইল নম্বরে মেসেজ পাবেন। তখন তিনি সেটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসীদের এনআইডি প্রদানের কার্যক্রম হাতে নেয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার করার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের জন্য এ কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে সে বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। পরবর্তীতে সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপের প্রবাসীদের জন্যও সুযোগটির সূচনা হয়।
সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনাভাইরাস মহামারি চলে আসায় থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা। মহামারি কেটে গেলেও সে উদ্যোগ এগোয়নি। অবশেষে ২০২২ সালে দায়িত্বে আসা কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন উদ্যোগটির সুফল প্রবাসীদের হাতে পৌঁছে দিতে যাচ্ছেন।
অনলাইনে কার্যক্রম শুরু হওয়া ছয়টি দেশ থেকে ভোটার হয়ে এনআইডি পেতে আবেদন করেন পাঁচ হাজার ১৩৮ জন। এদের মধ্যে চার হাজার ৬১০ জনের আবেদন এখন পর্যন্ত তদন্তই করেনি ইসি। অর্থাৎ ৯০ শতাংশ আবেদনে জমছে ধুলোর স্তর। তদন্ত হয়েছে ৪৭৫ জনের, এর মধ্যেও আবার নানা কারণ দেখিয়ে ২০৩ জন প্রবাসীর আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া তদন্তাধীন রয়েছে ৫৩ জনের আবেদন। অর্থাৎ তিন বছরে তদন্ত করে যে ২৭২ জনের আবেদন অনুমোদিত হয়েছে, তারা পাচ্ছেন এনআইডি।
গত তিন বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আবেদন এসেছে এক হাজার ৩৭৫টি, এর মধ্যে তদন্ত হয়নি এক হাজার ২৫৪টির। অনুমোদন হয়েছে ৬৩ জনের আবেদন। আমিরাতে প্রবাসীদের ভোটার হতে এনআইডি পেতে কোনো ফি না দিতে হলেও সার্ভিস চার্জ হবে ৫০ দিরহাম।
আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিসেস আইডিইএ (স্মার্ট এনআইডি) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক স্কোয়াড্রন লিডার শাহরিয়ার আলম এ বিষয়ে বলেন, চলতি বছর কার্যক্রমটির জন্য ৪০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৩
ইইউডি/এমজে
আরও পড়ুন:
>>আমিরাতে এনআইডি, জনপ্রতি দিতে হবে ৫০ দিরহাম!
>>বিদেশে এনআইডি: বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা
>>করোনায় ফের আটকে গেল প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রম
>>এনআইডি: প্রবাসীদের ৯০ শতাংশ আবেদনে পড়ছে ধুলোর স্তর