ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

২৩ ভোট কর্মকর্তা এমপির রাজনীতিতে যুক্ত, অভিযোগ জাপা প্রার্থীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
২৩ ভোট কর্মকর্তা এমপির রাজনীতিতে যুক্ত, অভিযোগ জাপা প্রার্থীর

নারায়ণগঞ্জ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের ২১ জন প্রিসাইডিং ও দুই জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর রাজনীতিতে যুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন। এসব কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন তিনি।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলমগীর সিকদার লোটন।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের পরিবর্তন প্রয়োজন মনে করে আমি মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন জমা দিয়েছি।

আবেদনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী উল্লেখ বলেন, আমি মো. আলমগীর সিকদার লোটন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী। আমার প্রতীক লাঙল। আমার অভিযোগ উল্লেখিত ব্যক্তিরা গত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিতর্কিত হয়েছিলেন। কারণ তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে রাজীনীতি করে থাকেন এবং সরাসরি কর্মী।

এছাড়ও গত ২৫ ডিসেম্বর ওই কর্মকর্তাদের ৯ জন খাগকান্দা এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নিয়েছেন এবং নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। তারা হলেন—প্রিসাইডিং অফিসার গিয়াস উদ্দিন সরকার, জাহেদুল হক, কফিল উদ্দিন, শাখাওয়াত হোসেন, হায়াতুজ্জামান, আহাম্মদ আলী, জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া, জানে আলম, মো. ফজলুল হক, দুলাল মিয়া, মইনুল হোসেন, মোজাম্মেল হক, ফারুক হোসেন, মোতাহার হোসেন, মৃদৃলকান্তি পাল, মাহাবুব আলম, সোলায়মান মিয়া, লোকনাথ পোদ্দার, দেলোয়ার হোসেন, নুরুল হক ও আনোয়ারুজ্জামান খানঁ। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও লোকমান হোসেন।

চিঠিতে জাপা প্রার্থী আরও লেখেন, এসব ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে একাধিকবার এমপি বাবুর সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। এমপি বাবু এবার নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর এসব শিক্ষক ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউবা দুই আঙুল উচিয়ে ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়েছেন। যার প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। ফেসবুকসহ সোস্যাল মিডিয়ায় এসব দলকানা শিক্ষকদের বিভিন্ন ছবি প্রকাশিত হয়েছে। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বাদ দিয়ে তার (এমপি নজরুল ইসলাম বাবু) প্রতিষ্ঠিত একটি কিন্ডারগার্টেন ইউনাইটেড স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১৪ জন লোক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মোজাম্মেল নামের একজন প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মইনুল হোসেন মানিক ফতেহপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। অথচ তাদের প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ফেসবুক পেজ থেকে পেয়েছি। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর স্ত্রী সায়মা আফরোজ ইভা আড়াইহাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত। শোকজের পরও দলবল নিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। তার অধীনের সকল কর্মকর্তা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। সেই সাথে তারা বাবুর পক্ষে ভোটও চাইছেন।

আবেদনে বলা হয়, এতে করে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমি সন্দেহ প্রকাশ করছি।  আমি তদন্ত সাপেক্ষ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। অতএব দলকানা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার পরিবর্তে নতুন করে নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

আবেদনের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোসাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও পেপার কাটিং সংযুক্ত করেছেন।

এ ব্যাপরে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানান, মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন অনুসন্ধান কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
এমআরপি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।