গত তিনটি সাধারণ নির্বাচনের সব ধরনের নথি, দলিলসহ যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দিতে বলেছে জাতীয় নির্বাচন তদন্ত কমিশন।
কমিশনের সাচিবিক সহায়তাকারী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাসউদ পারভেজ মজুমদার এ সংক্রান্ত চিঠি ইসি সচিবকে পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত গত ২৯ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনমূলে দি কমিশন ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ এর আওতায় ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে পর্যালোচনাপূর্বক ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিশন গঠন করা হয়।
গঠিত কমিশনকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা রয়েছে। প্রজ্ঞাপন মোতাবেক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, জাতীয় নির্বাচন তদন্ত কমিশন (২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪)-কে লজিস্টিক ও তথ্য সহায়তা প্রদান করবেন মর্মে নির্দেশনা রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন তদন্ত কমিশন (২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪)-এর গত ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনা এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক জরুরি ভিত্তিতে তথ্য সহায়তা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এক্ষেত্রে গত তিন সংসদ নির্বাচনের সকল দলিল/ নথি / কার্যবিবরণীর প্রাথমিক তালিকা (২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জন্য প্রযোজ্য) পাঠাতে হবে।
১. নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ/পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত দলিল:
ক. সীমানা নির্ধারণের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের নাম ও ফোন নম্বর
খ. সভার কার্যবিবরণী
গ. সকল পর্যায়ে উপস্থাপিত খসড়া প্রস্তাব
ঘ. এতদসংক্রান্ত কমিশন সভার কার্যবিবরণী এবং ফাইল নোট
ঙ. আপত্তির তালিকা এবং এগুলো নিষ্পত্তি সংক্রান্ত যাবতীয় দলিল
চ. জিআইএস তথ্য
ছ. চূড়ান্ত প্রকাশিত তালিকা
জ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
২. গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং অন্যান্য আইনে/বিধিমালায় পরিবর্তন/সংশোধন/বিয়োজন সংক্রান্ত দলিল:
ক. আইনে যেসব পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছিল তার বিবরণ
খ. আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো চিঠি এবং এগুলোর উত্তর
গ. এতদসংক্রান্ত কমিশন সভার কার্যবিবরণী এবং ফাইল নোট
ঘ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৩. রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত দলিল:
ক. আবেদনকৃত দলের তালিকা
খ. কমিশন কর্তৃক প্রাথমিক যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন
গ. সরেজমিন অনুসন্ধান প্রতিবেদন
ঘ. এতদসংক্রান্ত কমিশন সভার কার্যবিবরণী এবং ফাইল নোট
ঙ. চূড়ান্ত নিবন্ধিত দলের নাম
চ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৪. ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা সংক্রান্ত দলিল:
ক. সংশ্লিষ্ট নীতিমালা
খ. এতদসংক্রান্ত কমিশন সভার কার্যবিবরণী এবং ফাইল নোট
গ. স্থানীয় পর্যায়ে এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের নথি
ঘ. ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের তালিকা (এলাকা ও ফোন নম্বরসহ)
ঙ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৫. ভোট কেন্দ্ৰ নির্বাচন-সংক্রান্ত দলিল:
ক. সংশ্লিষ্ট নীতিমালা
খ. এতদসংক্রান্ত কমিশন সভার কার্যবিবরণী এবং ফাইল ন
গ. স্থানীয় পর্যায়ে এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের নথি
ঘ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৬. প্রেষণে নিয়োগকৃত কর্মকর্তা সংক্রান্ত দলিল:
ক. প্রেষণে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের তালিকা
খ. উক্ত নিয়োগ-সংক্রান্ত নথিসহ যাবতীয় দলিল
গ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৭. প্রার্থী মনোনয়ন সংক্রান্ত দলিল:
ক. আবেদনকৃত প্রার্থীদের তালিকা
খ . যাচাই/বাছাই/আপিল প্রক্রিয়া/বাতিল সংক্রান্ত যাবতীয় নথি/কাগজপত্র
গ. চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা
ঘ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৮. নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দলিল:
ক. সব ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজনের সংখ্যা ও এগুলোর ব্যয়
খ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
৯. ভোট প্রদানের হার দলিল:
ক. কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল বিবরণী
খ. সার্বিক ফলাফল
গ. ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৯০-১০০% ফলাফল সংক্রান্ত তথ্য
ঘ. ২০২৪ সালে কমিশন কর্তৃক ভোটপ্রদানের হার বৃদ্ধি সংক্রান্ত কাগজপত্র
ঙ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
১০. নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত দলিল:
ক. নিবন্ধন-সংক্রান্ত যাবতীয় নথি/দলিল
খ. পর্যবেক্ষণ করতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের আবেদন/প্রাসঙ্গিক তথ্য
গ. চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত পর্যবেক্ষণ তালিকা
ঘ. পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন
ঙ. বিদেশিদের দাওয়াত এবং ব্যয় সংক্রান্ত সংক্রান্ত নথি /দলিল
চ. গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন
ছ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
১১. নির্বাচনী অভিযোগ সংক্রান্ত দলিল:
ক. দায়েরকৃত অভিযোগসমূহ এবং এগুলোর নিষ্পত্তি
খ. ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ এবং ব্যয় সংক্রান্ত নথি / দলিল
গ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
১২. নির্বাচনী নিরাপত্তা সংক্রান্ত দলিল:
ক. নিরাপত্তা-সংক্রান্ত যাবতীয় নথি / দলিল
খ. এ সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয়
গ. অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দলিল
১৩. ইভিএম সংক্রান্ত দলিল:
ক. তৈরি/ক্রয়/বুয়েট/মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি /দলিল
খ. এ সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয়
জাতীয় নির্বাচন তদন্ত কমিশন (২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪) এর তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে এবং যথাসময়ে সম্পন্নের জন্য জরুরি ভিত্তিতে তালিকা মোতাবেক তথ্য সহায়তা দিতে বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচন কারচুপির জন্য রাতের ভোট আখ্যা পায়। আর ২০২৪ সালের নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই নিজেদের বিপক্ষে লড়ায় ডামি নির্বাচন বলা হয়।
ইইউডি/এমইউএম