ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ভোটার দিবস উদযাপন করবে ইসি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
ভোটার দিবস উদযাপন করবে ইসি ভোটার হতে দীর্ঘ লাইন; ফাইল ছবি

ঢাকা অবশেষে দেশের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ভোটার দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখনো কোনো দিনক্ষণ ঠিক করা না হলেও এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে সংস্থাটি।

আগের ইসি-সচিব মো. আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে গত এপ্রিল মাসে জানিয়েছিলেন, ভোটার দিবস উদযাপনে এখনো কোনো পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়নি। তবে এ নিয়ে কমিশনে আলোচনা করবো।

এরপর নির্বাচন নিয়ে সংলাপ আয়োজন, রোডম্যাপ ইত্যাদি কর্মযজ্ঞের মধ্যে হঠাৎই গত জুলাই মাসে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে বদলি হয়ে যান। এরপর ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান হেলালুদ্দীন আহমদ।  সোমবার (২৭ নভেম্বর)  তিনি জানান, বছরের একটি দিন ভোটার দিবস হিসাবে উদযাপন করা হবে। দিবসটি উদযাপন করা হবে এদেশের প্রাপ্তবয়স্ক যেসব মানুষ ভোটার হওয়ার যোগ্য তাদের মধ্যে ভোটার হওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য। পৃথিবীর অন্য অনেক দেশেই এই ভোটার দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে।

সংস্থাটির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলানিউজের কাছে অভিমত প্রকাশ করে বলেন, ভোটার দিবস উদযাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এতে নাগরিকদের মধ্যে ভোটার হওয়ার ব্যাপারে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হবে। এছাড়া সাধারণ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ভোটার হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহও বাড়বে।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতেও একটি ভোটার দিবস উদযাপন করা হয়। সেদেশে নির্বাচন কমিশন ২৫ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশেই দিবসটি উদযাপন করে থাকে। মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, ভোটার তালিকায় যোগ্য তরুণদের সর্বাধিক অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করা। ভারত এই দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য পূরণে সফলও হয়েছে। ২০১১ সালে দেশটি সর্বপ্রথম ভোটার্স ডে উদযাপন করে। সে-বছর ৫২ লাখ তরুণকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এছাড়া সব মিলিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয় প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ নতুন ভোটার।

এদিকে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন প্রথাগত উপায়ে বাড়িবাড়ি গিয়ে সম্পন্ন করা ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রায় প্রতিবারই ব্যর্থ হয়। এক্ষেত্রে যোগ্য ভোটারদের অনেকেই সাড়া দেন না। ইসির তদন্তে এটা বেরিয়ে এসেছে। ভোটার হওয়া যে নাগরিক অধিকার এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, সে সচেতনতাটুকুই অনেকের মধ্যে নেই।

কর্মকর্তারা আরো বলছেন, ভোটার্স ডে থাকলে একদিকে যেমন তরুণরা ভোটার হওয়ার উৎসাহ পাবে, তেমনি নির্বাচনে ভোট পড়ার হারও বাড়বে।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তাদের অনেকে বলছেন, যেহেতু সত্তর সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হয়েছিল, সেহেতু সেই নির্বাচনের দিনটাকেই ভোটার্স ডে হিসেবে উদযাপন করা যেতে পারে। কেননা, ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিল। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিল জনগণ। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সে রায়কে মেনে না নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের নিরীহ জনগণের ওপর চালিয়েছিল অপারেশন ‘সার্চ লাইট’-এর মতো নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর। আর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয়েছিল ১৭ ডিসেম্বর। তাই সেই তারিখে ভোটার দিবস উদযাপন করলে সবচেয়ে ভাল হবে। কেননা, এতে ইতিহাসটাও জানা হয়ে যাবে।

‘ভোটার্স ডে’ কবে হতে পারে মর্মে করা এক প্রশ্নের জবাবে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আজ (২৭ নভেম্বর) কমিশন বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো নির্দিষ্ট কোনো দিন ঠিক করা হয়নি। কমিশনের  পরবর্তী সভায় ‘দিন’ ঠিক করে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।

প্রতিবছর ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় একদিকে যেমন ভোটার অন্তর্ভুক্তি থেকে অনেকে বাদ পড়েন, তেমনি বাদ পড়েন মৃত ভোটাররাও।

ইসি কর্মকর্তাদের মতে, ভোটার দিবস উদযাপন ‘ভোটার এডুকেশনের’ কাজও করবে। এতে স্বত:প্রণোদিতভাবেই অনেকে ভোটার হতে ও মৃত ভোটার বাদ যাওয়ার তথ্য দেবেন।

আগের নিউজ: ‘ভোটার দিবস’ উদযাপনের কোনো পরিকল্পনা নেই

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
ইইউডি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।