সূত্র জানায়, ৩ থেকে ৯ মার্চ ইসির একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম সিঙ্গাপুর ঘুরে এসে কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য বেশকিছু সুপারিশ করেছে। আর সে ভিত্তিতেই কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ওই টিম সিঙ্গাপুরে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, সিঙ্গাপুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড চেকপয়েন্ট অথরিটি ও বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাবনাটি প্রণয়ন করে।
এতে বলা হয়েছে- সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রকৃত সংখ্যা জানা না গেলেও তা একলাখের বেশি নয়। আর এজন্য তাদের তথ্য নিয়ে দেশ থেকে তদন্তের পর এনআইডি ছাপিয়ে সিঙ্গাপুরে গিয়ে বিতরণের জন্য ছয় মাস সময় লাগবে।
কাজটি করার জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সিঙ্গাপুরের আইন। তারা একমাসের বেশি ভিসা দেয় না, বিধায় কয়েক ধাপে কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে কাজটি সম্পন্ন করার পক্ষে ইসি সচিব সচিবালয়।
এক্ষেত্রে ৫ থেকে ৬ জনের এক একটি টিম ২১ দিন করে সিঙ্গাপুর অবস্থান করে কার্যক্রম চালাবে। এজন্য সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছে দেশটিতে অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকও। ব্যাংকটি এ কার্যক্রম চালানোর জন্য তাদের বুথে অবস্থিত জায়গায় ইসিকে বুথ স্থাপনের জন্য সম্মতি দিয়েছে। এছাড়া সিটি ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের স্পেসও ব্যবহার করা হতে পারে।
ইসি সচিবালয়ের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় জনবল, সময়সীমা উল্লেখ করে হাইকমিশনের মাধ্যমে প্রথমে সিঙ্গাপুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। ভোটার কার্যক্রম ও এনআইডি সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, ক্যামেরা, আইরিশ নেওয়ার মেশিন, সিগন্যাচার প্যাড, ইত্যাদি কিট নেওয়ার বিষয়টিও দূতাবাসের মাধ্যমে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
ইসি কর্মকর্তাদের থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাবনায় সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি কমিউনিটির ভাড়া বাড়িতে বা হোটেলে রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পুরো কার্যক্রমটির প্রচারণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ও বাংলাদেশি কমিউনিটিকে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সিঙ্গপুর প্রবাসীদের ভোটার করে নেওয়া এবং সে দেশেই এনআইডি সরবরাহের বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এজন্য একটি পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। এপ্রিলেই কাজটি শুরুর একটি পরিকল্পনাও ছিল। সেভাবেই সবকিছু গুছিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কমিশনের অনুমোদন পেলেই এখন কাজটি শুরু হবে। আশাকরি এবছর সিঙ্গাপুর বসেই তারা এনআইডি পাবেন। দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের স্মার্টকার্ড বা এনআইডি সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে প্রবাসীদের সংখ্যা এক লাখের কম। তাই ছয় মাসের বেশি সময় আমাদের লাগবে না। এরপর মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এ কার্যক্রম চালানো হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশ দীর্ঘদিনের দাবি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর ২০১৮ সালে এ উদ্যোগ হাতে নেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর কয়েক দফায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠক করে সিঙ্গাপুরকেই প্রথম হিসেবে বেছে নেয় ইসি।
এ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে দেশে এসে প্রবাসীদের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন, সম্পত্তি ক্রয়সহ নানা প্রশাসনিক কার্যক্রমে ভোগান্তি দূর হবে বলে মনে করেন ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা আমাদের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এই এনআইডি না থাকার কারণে দেশে এসে তাদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সেটা যাতে না হয়, সেজন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছি আমরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
ইইউডি/এএ